নূরুল ইসলাম সুজন
নূরুল ইসলাম সুজন

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদ বেড়ে ৩২ গুণ

১৫ বছরের ব্যবধানে পঞ্চগড়-২ আসনের (বোদা ও দেবীগঞ্জ) সংসদ সদস্য ও বর্তমান রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলামের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ গুণ। সেই সঙ্গে বার্ষিক আয় বেড়ে ১৪ গুণ হয়েছে। গত পাঁচ বছরেই তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭৯ টাকা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পঞ্চগড়-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নূরুল ইসলাম। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।

নূরুল ইসলাম ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড়-২ আসন থেকে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি রেলপথমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নূরুল ইসলাম। ১৫ বছরে নূরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ও অস্থাবর সম্পত্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে স্থাবর সম্পত্তিও।

হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নূরুল ইসলামের কাছে নগদ ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ৬৩৪ টাকা এবং ব্যাংকে জমা ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ টাকা। ২০২৩ সালে এসে তাঁর নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৭১ টাকা এবং ব্যাংকে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৩৯ লাখ ২১ হাজার ৩৬৭ টাকা।

২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর মোট অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৮ লাখ ২ হাজার ৩১৩ টাকা, যা গত ১৫ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ৪৩৮ টাকায়।
এদিকে হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নূরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ছিল ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ৪ হাজার টাকা এবং আইন পেশা থেকে ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

২০২৩ সালে এসে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৭৩৭ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭২২ টাকা, বাড়িভাড়া থেকে ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, শেয়ার-ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৪ টাকা, আইন পেশা থেকে ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে ভাতা ও সুযোগ সুবিধা থেকে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৮ টাকা এবং মৎস্য খাত থেকে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ১৬ টাকা।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে অনেক। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নূরুল ইসলামের কৃষিজমি ছিল ৮ একর অর্থাৎ ২৪ বিঘা এবং ঢাকার বাড্ডায় অকৃষিজমি ছিল ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট।

বর্তমানে তাঁর কৃষিজমির পরিমাণ ৩০ বিঘা এবং অকৃষিজমির মধ্যে ঢাকার বাড্ডায় ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট, উত্তরায় ৫ কাঠার প্লট, বনশ্রীতে দুটি ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। ধানমন্ডিতে ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের পাকা বাড়ি রয়েছে, যা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়নি।

এমএসসি ও এলএলবি পাস নূরুল ইসলামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের মহাজনপাড়া এলাকায়। সেখানেও তাঁর তিনতলাবিশিষ্ট একটি পারিবারিক পাকা বাড়ি রয়েছে। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। পেশায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।