সুনামগঞ্জে হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির মামলা দুদককে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ

আদালত
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে করা মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জাকিয়া সুলতানা এ আদেশ দেন।

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট মামলাটি করেছিলেন সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক।

মামলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৫ কর্মকর্তা, ফসল রক্ষা বাঁধের ৪৬ জন ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) ৭৮ জন সদস্যসহ ১৩৯ জনকে আসামি করা হয়। তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদকে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। পরে বাদী প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজির আবেদন দেন। ওই আবেদনের দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আদালত নারাজি আবেদন গ্রহণ করে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত আমার নারাজির পিটিশনটি গ্রহণ করেছেন এবং পুনরায় মামলাটি তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন।’ সুনামগঞ্জে দুদকের আইনজীবী আইনুল ইসলাম আদেশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

২০১৭ সালের এপ্রিলে সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৫৪টি হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এ ঘটনার পর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর দুদক ১৩ এপ্রিল হাওরের ফসলহানি ও বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের তদন্তে দুদকের তৎকালীন পরিচালক বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে। এরপর ১৫ এপ্রিল পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

ফসলহানির ঘটনায় ওই বছরের ৩০ মে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ২ মে পাউবোর তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) মো. আবদুল হাই, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আফছার উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

দুদকের অনুসন্ধান শেষে ২ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ বাদী হয়ে পাউবো কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় পাউবোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, ঠিকাদারদের সঙ্গে অবৈধ যোগসাজশের অভিযোগ করা হয়। আর ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ঠিক সময়ে কাজ শেষ না করে কৃষকদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়।

পরের মাসে ৩ আগস্ট আরেকটি মামলা করে সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি। সুনামগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মামলাটি করেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদকে পাঠানোর আদেশ দেন।