ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জয়নব বেগম (১৯) কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেন। আশ্রয়কেন্দ্রে আসার কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর প্রসববেদনা শুরু হয়। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আশপাশে কোনো পরিবহন পাওয়া যাচ্ছিল না।
খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার শনিবার গভীর রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জয়নবকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আজ রোববার ভোরে সেখানে জয়নব এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
গৃহবধূ জয়নব বেগম উপজেলার রাজাখালীর বামুলাপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আরকানের স্ত্রী। নবজাতকের মা জয়নব তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ওসি স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। স্যার না হলে আমার কী অবস্থা হতো জানি না।’
আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব শুরু হওয়ার পর গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে আশ্রয়কেন্দ্রে যান জয়নব বেগম। রাত দেড়টার দিকে তাঁর প্রসববেদনা শুরু হয়। এ সময় উপকূলীয় এলাকা রাজাখালীতে কোনো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার। তাৎক্ষণিক তিনি রাজাখালীর এয়ার আলী খান উচ্চবিদ্যালয়ে পৌঁছে প্রসববেদনায় কাতরাতে থাকা জয়নব বেগমকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন। এরপর ১০ কিলোমিটার দূরের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে জয়নব ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, ওই নারী স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে ভালো আছে।
ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, গতকাল সারা দিন ও রাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ও আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে তাঁরা কাজ করেছেন। রাতে আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করার সময় খবর পেলেন, এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে এক নারী প্রসববেদনায় কাতরাচ্ছেন। তিনি জানতেন, রাত দেড়টায় সেখানে কোনো গাড়ি পাওয়া যাবে না। তখন তিনি গাড়ি নিয়ে সেখানে পৌঁছে ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ভোর সাড়ে চারটার দিকে ওই নারী সন্তান জন্ম দেন।