রাত তখন সাড়ে ১২টা। নিত্যদিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলছে। তবে যাত্রীবাহী যান নেই। কয়েক মিনিটের মধ্যে সাইরেন বাজিয়ে এল বেশ কয়েকটি গাড়ি। শুরুতে হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি। তারপর পাঁচটি যাত্রীবাহী বাস ও পেছনে বিজিবির গাড়ি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সুলতানা মন্দির এলাকায় গতকাল বুধবার রাতে এ চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীবাহী বাসগুলোকে পাহারা দিয়ে ঢাকার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মধ্যরাতে সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় স্বাভাবিক দিনের মতো গাড়ি চলাচল করছে। চট্টগ্রামমুখী লেনে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারা দেওয়া যাত্রীবাহী বাসগুলোর মধ্যে গ্রীন লাইন, শ্যামলী ও বাঁধন পরিবহনের বাস ছিল।
যাত্রীবাহী বাস পার করার এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পেট্রোলবোমা হামলাসহ ভাঙচুর থেকে রক্ষা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় যাত্রীবাহী যান পারাপারের ব্যবস্থা নেন জেলা প্রশাসক। তাঁরা পাঁচটি বাস সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে গ্রহণ করেন। এরপর গাড়িগুলোকে সীতাকুণ্ডের সীমানা বড় দারোগাহাট ওজন স্কেল এলাকা পার করে দেন।
ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, বড় দারোগাহাটে আগেভাগে উপস্থিত থাকা মিরসরাই উপজেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে তিনি বাসগুলো হস্তান্তর করেন। ওই ম্যাজিস্ট্রেট তাঁদের উপজেলা পার করে ফেনী প্রশাসনের হাতে তুলে দেবেন। এভাবে বাসগুলো ঢাকায় পৌঁছাবে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে দিনে দুবার এভাবে যাত্রীবাহী বাস পারাপার করবেন বলে জানান তিনি।
বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার সিংহ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ফৌজদারহাট এলাকা থেকে বাসগুলো গ্রহণ করেছেন। তাঁরা কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িকে বুঝিয়ে দেন। যাত্রীদের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সে জন্য গাড়িগুলোকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের পন্থিছিলা এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের পরিচালনাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ঢাকামুখী একটি রডবাহী লরিতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় লরিটির চালক সামান্য দগ্ধ হন। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে যাত্রীবাহী বাসের চালক ও যাত্রীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।