কিশোরগঞ্জে যাত্রীর স্বজনদের হামলায় জখম রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার

যাত্রীর স্বজনদের হামলায় আহত কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এস এম খলিলুর রহমান। শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ছবি: সংগৃহীত

ট্রেনে এক নারী যাত্রীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ওই নারীর স্বজনেরা কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার এস এম খলিলুর রহমানকে বেধড়ক পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। স্টেশনমাস্টার খলিলুর রহমান বর্তমানে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযুক্ত ওই নারী আন্তনগর এগারসিন্দুর প্রভাতি ট্রেনের যাত্রীর ছিলেন। রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার খলিলুর রহমানও সস্ত্রীক ওই ট্রেনে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিলেন।

রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে স্টেশনমাস্টার খলিলুর রহমান তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে এগারসিন্দুর প্রভাতি ট্রেনে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ রওনা হন। ট্রেনের ‘খ’ বগির ডাবল কেবিনে আগে থেকেই এক তরুণী বসা ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশন–সংলগ্ন পূর্ব তারাপাশা এলাকার বাসিন্দা। খলিলুর ও তাঁর স্ত্রী ওই একই কেবিনে গেলে ওই তরুণী তাঁদের টিকিট দেখতে চান। স্টেশনমাস্টার হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পরও ওই তরুণী তাঁদের বসতে না দিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু করেন। পরে ট্রেনটি কুলিয়ারচর স্টেশনে পৌঁছালে স্টেশনমাস্টার দুটি টিকিট কেটে আবারও ওই কেবিনে ঢোকেন। তখনো ওই তরুণী তাঁদের বসতে দেবেন না জানিয়ে আবারও তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে মুঠোফোনে ওই তরুণী তাঁর ভাইকে খবর দেন। ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে পৌঁছালে ওই তরুণীর ভাইসহ পাঁচজন মিলে খলিলুরের ওপর চড়াও হন। তাঁরা স্টেশনমাস্টারকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। রেলওয়ে পুলিশ আসার আগেই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন হামলাকারীরা। পরে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন স্টেশনমাস্টারকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লিটন মিয়া ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ স্টেশনে থামতেই ওই নারী যাত্রীর অপেক্ষমাণ স্বজনেরা স্টেশনমাস্টার খলিলুর রহমানের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন স্টেশনমাস্টারকে দেখে এসেছেন। তাঁর স্ত্রী লিখিত অভিযোগ দেবেন বলেছেন। অভিযোগ পেলে মামলা রুজুসহ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত নারী যাত্রী ও তাঁর ভাই অন্তুর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে স্টেশনমাস্টারের ওপর হামলার ঘটনার পর কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এগারসিন্দুর গোধূলি ট্রেনটি দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এক ঘণ্টা বিলম্ব করে স্টেশন ছেড়ে যায়। এ ঘটনায় অনেক যাত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আবদুল আহাদ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে এসে পৌঁছাই। সময় হয়ে গেলেও ট্রেন না ছাড়ায় জিজ্ঞেস করতে গিয়ে দেখি, স্টেশনমাস্টারের কক্ষে তালা লাগানো। পরে জানতি পারি, কোনো এক ঘটনায় কারা জানি স্টেশনমাস্টারকে মারধর করেছে। কিন্তু এ ঘটনার জন্য ট্রেন বিলম্বে ছাড়ায় যাত্রীদের জন্য হয়রানি হয়েছে।’