সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন দখল, লুটপাট ও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে শহরের নিউমার্কেট এলাকার একটি হোটেলের মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী মো. আসাদুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে আসাদুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, তিনি ভোমরা স্থলবন্দরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে বন্দরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ভোমরা ইউপির চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরেই ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবে ভোটও দিচ্ছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁকে কোনো পদে আসতে না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাবিবুর রহমান, কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম, লুৎফর রহমানসহ কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয় অবৈধভাবে দখল করেন। পরে অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাৎসহ লুটপাট চালাতে থাকেন। সাধারণ সভার তারিখ নির্ধারণ, ভোটার তালিকা থেকে অবৈধভাবে ভোটারদের নাম বাতিলসহ অনিয়ম করতে থাকেন। অথচ হাবিবুর নিজেই দীর্ঘদিন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছিলেন না। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন দখল করেই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম যুক্ত করেন। দখলের পর তাঁকে তাঁদের কমিটিতে রাখার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে এবং ৭ আগস্ট গঠিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করে চিঠি ইস্যু করা হয়। কিন্তু দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা দিতে আপত্তি করায় ২৯ আগস্ট এক চিঠিতে তাঁর নামের পরিবর্তে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম মাকছুদ খানের নাম সংযুক্ত করা হয়। অথচ এই মাকছুদ খান সিঅ্যান্ডএফ অসোসিয়েশনের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আসাদুর রহমান আরও বলেন, হাবিবুরের দাবি মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় ওই কমিটির তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দিয়েই শুধু ক্ষ্যান্ত হননি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কারও চাঁদা বকেয়া থাকলে তাঁকে চিঠি দেওয়া নিয়ম। কিন্তু চিঠি না দিয়েই তাঁকে ৩০ আগস্ট ভোটার তালিকা থেকেও বাদ হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে হয়রানি করতে হত্যা মামলার আসামিদের ভাড়া করে নাজমুল আলম ও লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে দখল ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত হাবিবুরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়ছে।
তবে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র মোতাবেক আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটিতে আসাদুরের নাম রাখা হলেও পরে কেন নাম বাদ দেওয়া হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁকে একবার নয়, দুবার বকেয়া মাসিক টাকা ও বিল অব এন্ট্রির টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে তিনি বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ পড়েছে। শুধু তাঁর নয়, বয়েক টাকা পরিশোধ না করার ৩০-৩২ জনের নাম বাদ পড়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের টাকা লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আপনারা এসে দেখে যান, হিসাব-নিকাশ। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’