কুমিল্লায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে নূরজাহান বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূর শরীরে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। আগুনে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গেছে। এ ছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খুন্তির ছ্যাঁকার দাগ রয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার শিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুই সন্তানের জননী নূরজাহান বেগমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর নূরজাহানের বাবা জয়নাল আবেদীন কোতোয়ালি মডেল থানায় নূরজাহানের স্বামী খোরশেদ আলমসহ (৪৫) শ্বশুরবাড়ির ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নূরজাহানের ভাশুর আলী আশরাফ, দুই জা শাহীনুর বেগম ও লাইলি বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। স্বামীসহ অপর তিন আসামি পলাতক।
হত্যাচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। তিন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। স্বামীসহ তিনজন পলাতক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১২টার দিকে ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নূরজাহানের সঙ্গে তাঁর স্বামী খোরশেদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় খোরশেদের সঙ্গে তাঁর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীরা মিলে নূরজাহানকে দড়ি দিয়ে বেঁধে শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। সেই সঙ্গে নূরজাহানকে গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছ্যাঁকা দেন তাঁরা। সকালে প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নূরজাহানকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নূরজাহানের বাবা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি এর আগে কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করি। কিন্তু তারা এই সমাধান না মেনে আমার মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে আহত করল। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন। তিনি জানান, আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। তিন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। স্বামীসহ তিনজন পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।