বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল অয়াংচুক। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে চর মাধবরাম এলাকায়
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত  স্থান পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল অয়াংচুক। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় কুড়িগ্রামের
ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে চর মাধবরাম এলাকায়

কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে চর মাধবরাম এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল অয়াংচুক। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় তিনি বাংলাদেশ-ভুটানের যৌথ উদ্যোগে জিটুজিভিত্তিক বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে আসেন।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত জায়গায় প্রায় ১৫ মিনিট অবস্থান করেন ভুটানের রাজা। পরিদর্শন শেষে তিনি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্বাচনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তিনি এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

পরিদর্শনের সময় ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল অয়াংচুকের সঙ্গে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক খন্দকার, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

২৫ মার্চ চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন ভুটানের রাজা। গত সোমবার তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন করে তিনটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন। আর সাংস্কৃতিক বিনিময়ে একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করেন। নতুন সমঝোতা স্মারক সইয়ের অংশ হিসেবে তিনি কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন পরিদর্শনে আসেন।

ভুটানের রাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। তিনি বলেন, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল ওয়াংচুক এই জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। পরিদর্শনে এসে জায়গাটি তিনি পছন্দ করেছেন। তিনি (ভুটানের রাজা) এটিও বলেছেন যে যখন কাজ শুরু হবে, তখন আমি আরও একবার এখানে আসব। তিনি এখানকার জায়গা ও যোগাযোগব্যবস্থা দেখে সন্তুষ্ট হয়েছেন।

ভুটানের রাজার বরাত দিয়ে শেখ ইউসুফ হারুন আরও বলেন, রাজা বলেছেন, স্থানীয় লোকজনের চাহিদা এবং বিনিয়োগকারীদের চাহিদার সমম্বয়ে এখানে কলকারখানা গড়ে উঠবে। বিশেষ করে কৃষিভিত্তিক এবং উৎপাদনশীলতাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে চর মাধবরাম এলাকায় ১৩৩ দশমিক ৯২ একর জমি ভুটানকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বেজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ জন্য আরও কিছু জমির প্রয়োজন হবে। তাই ব্যক্তি মালিকানাধীন ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলমান আছে। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের এক জনসভায় জেলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ধরলা নদীর পাড়ে এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক খন্দকার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ভুটান কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। এটা কুড়িগ্রামের মানুষের জন্য স্বাধীনতার মাসে প্রধানমন্ত্রীর বড় উপহার। এখানে শিল্পাঞ্চল হলে জেলার মানুষের কর্মসংস্থান হবে, অর্থনীতির চাকা সচল হবে।

পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা বেলা পৌনে তিনটার দিকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গোলকগঞ্জে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁকে বিদায় জানান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। রাজা ভারত হয়ে ভুটানের থিম্পুতে পৌঁছাবেন।