ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে আসার সময় হামলার শিকার হয়েছেন তিনটি পরিবারের ছয়জন। হামলার শিকার ব্যক্তিরা জোর করে চরাঞ্চলের মানুষকে ধর্মান্তরিত করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে তাঁরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছিলেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, আবদুর রহিম, শরিফুল ইসলাম, উষা, খুশি বেগম ও ইতি বেগম আহত হন। তাঁরা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার নুরা পাগলার ভক্ত বলে জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম জানান, সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর গ্রামের একটি পারিবারিক বিষয়কে ধর্মীয় ইস্যু বানিয়ে একটি চক্র দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। ওই গ্রামের আইয়ুব মোল্যার সঙ্গে তাঁদের পারিবারিকভাবে ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আইয়ুবের পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলা হয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে সেটি ধর্মীয় রং মাখিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়।
শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাসখানেক আগে কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদে তাঁরা গোপনে মানুষকে খ্রিষ্টান হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা মুসলিম, নামাজ-কালাম পড়ি। কোনো খ্রিষ্টান রীতিনীতিতে চলি না। কাউকে উদ্বুদ্ধও করি না। নুরা পাগলার ভক্ত হওয়ায় বিশেষ দিনে সাদা কাপড় পরি। আমাদের পীর নুরা পাগলার গুণগান করি। যার ভিডিও ও ছবি আমরা ফেসবুকে ছাড়ি। সেগুলো ব্যবহার করে আমাদের খ্রিষ্টান চক্র বানিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এ নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে গেলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার করতে বলেন। সেই অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছিলাম। পথে এলাকার প্রতিপক্ষ ও অপরিচিত কিছু লোক আমাদের ওপর হামলা করে।’
অভিযুক্ত আইয়ুব মোল্যার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কয়েক দিন আগে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তারই ব্যাখ্যা দিতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা ক্লাবে প্রবেশ করার আগেই কে বা কারা তাঁদের ওপর হামলা করে। হামলার কারণে আর সংবাদ সম্মেলন হয়নি।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিরা চরাঞ্চলের অসহায় গরিব মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে ধর্মান্তরিত করে আসছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগে স্থানীয় কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।