সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির জের ধরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্বনাথ পুরান বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে বিকেলে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কথা উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল বিকেল থেকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ‘সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজ, চিনি চোরাচালানকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির করে সংগঠনকে ‘কলঙ্কমুক্ত’ করার দাবি জানান। এ জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণায় পৌরশহরে আনন্দ মিছিল বের করে একটি পক্ষ। অপরদিকে, কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা মিছিল বের করেন বিলুপ্ত কমিটির নেতা–কর্মীরা।
এদিকে, কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণায় রাত আটটার দিকে পৌরশহরে আনন্দ মিছিল বের করেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন, বিশ্বনাথ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ তাঁদের কর্মী-সমর্থকের। মিছিল শেষে রাতে তাঁরা বিশ্বনাথের বাসিয়া সেতুর ওপর পথসভা করেন। অন্যদিকে, কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে পৌরশহরে পাল্টা মিছিল বের করেন বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশসহ তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। একপর্যায়ে বিশ্বনাথ পুরান বাজার এলাকার ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পার্থ সারথি দাশের দাবি, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের নির্দেশে রাজু, শামীম, রিপন, আসলাম, জাকির, সিরাজুলসহ অস্ত্রধারীরা উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা করেছেন।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মী জাকির হোসেন। তিনি দাবি করেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে একদল মিছিল করলে উপজেলার নেতা-কর্মীরা প্রতিহত করেছেন। এ নিয়ে তাঁরা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ফোনে যোগযোগের চেষ্টা করে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি।