বসতঘর পুড়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়হীন হওয়া পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরা পেলেন নতুন ঘর। আজ বিকেলে মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারি আবাসন প্রকল্পে
বসতঘর পুড়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়হীন হওয়া পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরা পেলেন নতুন ঘর। আজ বিকেলে মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারি আবাসন প্রকল্পে

চট্টগ্রামের মিরসরাই

সেই পরবা লক্ষ্মী পেলেন আধা পাকা ঘর

চট্টগ্রামে মিরসরাইয়ে বসতঘর পুড়ে যাওয়ার পর তিন শিশুসন্তান নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়া পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরাকে ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার রসুলপুর সরকারি আবাসন প্রকল্পে ২ শতাংশ জমিসহ দুই কক্ষের একটি আধা পাকা ঘর তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পরবা লক্ষ্মীকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪টি কম্বল ও নগদ ১০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে।

ঘর পুড়ে যাওয়ার পর পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরার তিন শিশুসন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। আজ বুধবার প্রথম আলো পত্রিকার চট্টগ্রাম সংস্করণে ‘শিশুসন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকছেন পরবা লক্ষ্মী’ শিরোনামে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন প্রথম আলোকে বলেন, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরে পরবা লক্ষ্মীকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হিঙ্গলী ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারি আবাসন প্রকল্পের ঘর পেলেও না আসায় একটি পরিবারের বরাদ্দ বাতিল হয়েছিল। সেটি পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরাকে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এতে পরবা লক্ষ্মীর কষ্ট কিছুটা হলেও লাগব হবে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরবা লক্ষ্মীকে ঘরটি বুঝিয়ে দেওয়ার সময় মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রনি সাহা ও উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ম. ইসমাইল উপস্থিত ছিলেন।

নতুন ঘর পাওয়ার বিষয়ে চাইলে পরবা লক্ষ্মী ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ঘর পুড়ে যাওয়ার পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন, এই ভেবে দিশেহারা ছিলেন তিনি। এত দ্রুত নতুন একটি ঘর পাবেন, স্বপ্নেও ভাবেননি। স্বপ্ন দেখছেন নতুন ঘরে নতুন করে পথচলা শুরু করবেন। ঘর পেয়ে অনেক খুশি লাগছে তাঁর।

পাঁচ বছর আগে তিনটি শিশুসন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘর ছাড়েন পরবা লক্ষ্মীর স্বামী। মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের নাপিত্তাছাড়া ত্রিপুরাপাড়ায় স্বামীর রেখে যাওয়া জরাজীর্ণ একটি ঘরে শিশুসন্তানদের নিয়ে ছিলেন পরবা লক্ষ্মী। এক বছর পর দিনমজুরি করে অর্জিত টাকা আর এনজিও থেকে নেওয়া ঋণে বাঁশ ও কাঠের তিন কক্ষের একটি ঘর তৈরি করেন পরবা লক্ষ্মী। গত রোববার সকালে সেই ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘর হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন পরবা লক্ষ্মী।