পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণ

নব্য জেএমবির ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র

২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ষোলশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণ ঘটে
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম ষোলশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণের ঘটনায় নব্য জেএমবির ১৬ জঙ্গিকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সরকারি স্থাপনায় হামলা ও সরকারি কর্মচারীদের হত্যা করে নিজেদের কার্যক্রমে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন আসামিরা।

আজ  বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এটি জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় গুহ।

অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মো. সাইফুল্লাহ (২৪), মো. এমরান (২৪), আবু সালেহ (২৫), মো. আলাউদ্দিন (২৩), মহিদুল আলম (২৫), মো. জহির উদ্দিন (২৮), মো. মঈনউদ্দিন (২৩), রহমত উল্লাহ (২৪), সাহেদ হোসেন (২৪), মো. সেলিম (৩৩), আবদুল্লাহ আল নোমান (২৫), আবদুল কাইয়ুম (২৪), কায়সার উদ্দিন (২১), মো. মোরশেদুল আলম (২৫) দুবাইপ্রবাসী মো. শাহজাহান (২৮) ও ১৭ বছরের এক কিশোর।

২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ষোলশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। বিস্ফোরণে ট্রাফিক বক্সটিতে থাকা সিগন্যাল বাতি নিয়ন্ত্রণের সুইচ বোর্ড ধ্বংস হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করে। এ মামলায় ইতিমধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগপত্রে ২০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা বলা হলেও নাম–ঠিকানা সঠিক না পাওয়ায় চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাকি ১৬ জনকে আসামি করা হয় অভিযোগপত্রে। এটি আদালতে গ্রহণের জন্য এখনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি নোমান সংগঠনটির আমিরের দায়িত্বে ছিলেন, সেলিম সামরিক কমান্ডার। পুলিশ বক্সে হামলার আগে সেলিম, জহির, নোমান ও মোর্শেদ মিলে জিআই পাইপ দিয়ে একটি বোমা তৈরি করে পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটান।

সিরিয়াফেরত জঙ্গিসহ পাঁচজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র

এদিকে সিরিয়াফেরত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য শাখাওয়াত আলী লালুসহ পাঁচজনকে আসামি করে আরেকটি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের এসআই ফরহাদ হোসেন আদালতে অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

বাকি আসামিরা হলেন, শাখাওয়াতের সহযোগী শামীমুর রহমান, সৈয়দ জিয়াউল হক, আবদুল্লাহ আল মামুন ও আমজাদ হোসেন।

গত বছরের ২১ জুন নগরের খুলশী এলাকার একটি মসজিদের সামনে থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রাম। এ ঘটনায় এসআই রাছিব খান বাদী হয়ে মামলা করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, শাখাওয়াত যুদ্ধ করার জন্য চার বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সিরিয়ায় যায়। এরপর গত বছরের মার্চ মাসে দেশে ফেরেন।  দেশে থাকাকালে  জঙ্গি সংগঠনের পক্ষে বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও সংহতির বিরোধিতা, জননিরাপত্তা বিঘ্ন এবং বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার করেছিলেন। ২০১২ সাল থেকে শাখাওয়াত তাঁর ভায়রা আরিফ এবং মামুনদের প্ররোচনায় জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হন। তাঁদের সংগঠনের নেতা মোয়াজের (চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন শাখাওয়াত।