চট্টগ্রামে চলমান ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি, চট্টগ্রাম বিভাগ। আজ বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে
চট্টগ্রামে চলমান ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি, চট্টগ্রাম বিভাগ। আজ বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে

সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: জাতীয় নাগরিক কমিটি

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি, চট্টগ্রাম বিভাগ। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় তারা। এ সময় লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেশি–বিদেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে।

আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ হাসান আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সাগুপ্তা বুশরা মিশমা, চট্টগ্রামের সদস্য জাবেদ আরাফাত, মোহাম্মদ এরফানুল হক, মোসলেহ উদ্দিন খান, ইমন সৈয়দ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশি–বিদেশি বিভিন্ন চক্র দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্রে মেতেছে। ফেসবুকসহ অন্যান্য পরিসরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই মুহূর্তে আমাদের সবাইকে খুবই সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। আর যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট না হয়, সে জন্য আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। অন্যথায়, দেশে–বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নিয়ে আমাদের ঐক্য ভেঙে দিতে পারে।’

অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে শুনানির পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠাতে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এ সময় চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। আমরা বিক্ষোভকারীদের এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর শিগগিরই তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় আটক করা হয়েছে জানিয়ে বক্তব্যে বলা হয়, ‘এই ঘটনা কোনোভাবে ধর্মীয় বিভেদ হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সেটাই প্রচারের চেষ্টা করছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সনাতনী ভাই ও বোনদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, আপনারা এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবেন না। আমাদের খুবই সজাগ থেকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।’

ষড়যন্ত্রকারীরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আমাদের হিন্দু-মুসলিম সবার সম্মিলিত দাবি হবে একটাই, আইনজীবী সাইফুল হত্যার বিচার করতে হবে। আর কেউ প্রতিবেশীদের স্থাপনা ও সম্পদ নষ্ট করবেন না। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা সুযোগ নিয়ে লুটপাট, হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে দিতে চেষ্টা করতে পারে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোনো দোসর যাতে আমাদের মধ্যে ঢুকে শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।’