পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় মামুন হাওলাদার (৪৮) নামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে পাশের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া গ্রামের আজহারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি উপজেলার জোলাগাতি গ্রামের মৃত মোনাজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ, নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউপি সদস্য মামুন জোলাগাতি গ্রামে নিজের বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার জন্য সকালে বের হন। জোলাগাতি থেকে শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হলে পাশের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া গ্রামের সড়ক দিয়ে যেতে হয়। বেলা ১১টার দিকে ভিটাবাড়িয়া গ্রামের আজহারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে পৌঁছানোর পর ১০–১২ জন তাঁর মোটরসাইকেলের গতি রোধ করেন। এরপর তাঁকে ধরে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সড়কের পাশে ফেলে যান। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন তিনি। খবর পেয়ে ভান্ডারিয়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। দুপুরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বিশ্বাস বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
নিহত মামুনের মোটরসাইকেলচালক সজলের বরাত দিয়ে শিয়ালকাঠী ইউপির চেয়ারম্যান সিকদার দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভিটাবাড়িয়া গ্রামে মাদ্রাসার সামনের সড়কে আগে থেকে গাছ ফেলে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা। মোটরসাইকেলটি সেখানে পৌঁছানোর পর দুর্বৃত্তরা সামনে ও পেছন থেকে মামুনের ওপর হামলা করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় মোটরসাইকেলচালক সজলকেও মারধর করা হয়।
এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন সদস্য বাচ্চু মিয়াকে সাপলেজা গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলা চলাকালে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এলাকায় নিহত মামুনের প্রতিপক্ষ ছিল। তা ছাড়া মামুনের বিরুদ্ধে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, নারী নির্যাতন ও ডাকাতির অভিযোগ আছে। তিনি নারী নির্যাতন ও ডাকাতির মামলায় জেল খেটেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোলাগাতি গ্রামের অন্তত চারজন বাসিন্দা বলেন, মামুনের সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরোধ আছে। তিনি বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষের লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইউপি সদস্য মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর মুখমণ্ডল বিকৃত এবং বাঁ পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা হবে।