চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি পেতে পুকুরপাড়ে গাছের নিচে বসে আছেন এক দল তরুণ। আজ দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি এলাকায়
চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি পেতে পুকুরপাড়ে গাছের নিচে বসে আছেন এক দল তরুণ। আজ দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি এলাকায়

চুয়াডাঙ্গায় ‘উড়ো মেঘের বৃষ্টিতে’ স্বস্তি মেলেনি, তাপমাত্রা আরও বেড়েছে

চুয়াডাঙ্গায় টানা ২৩ দিন অপেক্ষার পর অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। এই বৃষ্টি প্রতীক্ষিত হলেও জনজীবনে তেমন স্বস্তি দিতে পারেনি। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি আরও বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার গতকাল দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জেলায় ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এ সময় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া রেকর্ড করা হয়। পর্যবেক্ষণাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, এর আগে ৩১ মার্চ সর্বশেষ বৃষ্টি নেমেছিল। ওই দিন বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ২ মিলিমিটার।

আজ বুধবার বেলা তিনটায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ২১ শতাংশ। যেখানে গতকাল একই সময়ে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতা ২৮ শতাংশ। সে হিসাবে এক দিনের ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গতকাল দিবাগত মধ্যরাতের বৃষ্টির বিষয়ে কোনো পূর্বাভাস ছিল না। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উড়ে আসা মেঘের কারণে সীমিত সময়ে আকস্মিক এই বৃষ্টিপাত হয়েছে। যে কারণে এই বৃষ্টি চলমান তাপপ্রবাহে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। সাধারণত বৃষ্টির পর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।

জামিনুর রহমান বলেন, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে ভূপৃষ্ঠ চরম উত্তপ্ত যা শীতল করতে বা তাপমাত্রা কমানোর জন্য টানা বৃষ্টির প্রয়োজন। সেই সঙ্গে মেঘের কারণে সূর্যের তাপ যাতে মাটিতে পড়তে না পারে, তাহলে তাপপ্রবাহ কমে যাওয়াসহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে আপাতত তার কোনো লক্ষণ নেই। যে কারণে বৃষ্টির পরও ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গতকাল রাতের বৃষ্টিপাত নিয়ে সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘থুতু দিয়ে কি ছাতু (ছোলা ও যবের তৈরি বিশেষ খাবার) ভেজানো যায়। অ্যাকন দরকার ঝুম বৃষ্টি। তা না হলি মাঠে ধান-সবজির বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এই বৃষ্টিতে কিছুই যে উপকার হবে না, ঠিক তেমনটি নয়। যেসব ধানগাছ কাচ থোড় পর্যায়ে আছে, সেগুলোর বেশ উপকার হবে। তবে খরা পরিস্থিতিতে আরও বেশি বৃষ্টির প্রয়োজন।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি এপ্রিল মাসে মৃদু থেকে শুরু করে মাঝারি ও তীব্র, এমনকি অতি তীব্র তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ২ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের মধ্যে ৯ দিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এপ্রিলের বাকি দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা আছে।