রাজা-বাদশাহ কিনলেই পাওয়া যাবে দুটি ছাগল

ফ্রিজিয়ান জাতের এই দুটি ষাঁড়ের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর নয়াপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি ষাঁড় চার বছর ধরে লালন-পালন করছেন। তিনি ওই সময় এগুলো কিনেছিলেন সাড়ে তিন লাখ টাকায়। আদর করে ষাঁড় দুটির নাম রাখেন ‘রাজা’ ও ‘বাদশাহ’। ষাঁড় দুটি কোরবানির গবাদিপশুর হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর নয়াপাড়া গ্রামের প্রান্তিক খামারি আছর আলী। তিনি এগুলো ২০ লাখ টাকায় বেচতে চাচ্ছেন। তবে যাঁরা রাজা-বাদশাহকে কিনবেন, তাঁদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ—তাঁরা বিনা মূল্যে পাবেন দুটি ছাগল।

স্থানীয় লোকজন জানান, পরম যত্নে রাজা-বাদশাহকে লালন–পালন করছেন আছর আলী। আদর করে একটার নাম রাখেন রাজা, আরেকটার নাম বাদশাহ। কালোর মাঝে সাদা রঙের দুটি ষাঁড়। এর মধ্যে রাজার দৈর্ঘ্য ১১ ফুট। ওজন ১ হাজার ১৫০ কেজি। আর বাদশাহর দৈর্ঘ্য ১০ ফুট। ওজন এক হাজার কেজি। রাজা-বাদশাহ একসঙ্গে থাকে এবং খাবারও খায় একসঙ্গেই। একটি আরেকটির চোখের আড়াল হলেই হাম্বা হাম্বা শুরু করে, অস্থির হয়ে যায়। ষাঁড়গুলো দেখতে প্রতিদিন আছর আলীর বাড়িতে লোকজন ভিড় করেন। ষাঁড় দুটি যখন মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, তখন আরও আকর্ষণীয় লাগে। সৌন্দর্য বাড়াতে দুই ষাঁড়ের জন্য দরজির দোকান থেকে লাল কাপড়ের পোশাক বানানো হয়।

এ ছাড়া রাজা-বাদশাহর জন্য বানানো হয়েছে আলাদা শেড। রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টা বৈদ্যুতিক খাবারব্যবস্থা। খাবারের বিষয়ে আলাদা যত্ন নিতে হয় তাদের জন্য। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রয়েছে চিড়া, ভুসি, কলা, ধানের কুঁড়া, ছোলা, ভুট্টা, কাঁচা ঘাস, লাল চিনি ইত্যাদি। রাজা-বাদশাহর আকার–আকৃতিও অনেক সুন্দর। এ জাতের গরু সাধারণত এক হাজার থেকে দুই হাজার কেজি মাংস উৎপাদনে সক্ষম।

রাজা-বাদশাহর মালিক আছর আলী বলেন, প্রায় চার বছর আগে বাজার থেকে কিনে আনার পর থেকে পরম আদরযত্নে বড় করেছেন ষাঁড় দুটিকে। নিজের সন্তানের মতো বড় করতে পরিশ্রম করেছেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও। তাই তাঁর ইচ্ছা, রাজা-বাদশাহকে বাড়ি থেকেই বিক্রি করা হবে। ষাঁড় দুটি ২০ লাখ টাকা বিক্রির আশা। তবে দাম কিছু কমবেশি হলেও এবারের ঈদে বিক্রি করে দেওয়া হবে। যে ক্রেতা ক্রয় করবেন, রাজা-বাদশাহর সঙ্গে তাঁকে দুটি ছাগল ফ্রি দেওয়া হবে এবং প্রয়োজন হলে কোরবানির দিনের আগপর্যন্ত ওদের লালন-পালন করে দেওয়া হবে।

ফ্রিজিয়ান জাতের এই দুটি ষাঁড়ের দাম হাকানো হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর নয়াপাড়া এলাকায়

হোসেনপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন জানান, ‘আছর আলীর ষাঁড় দুটি লালন-পালনের বিষয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি (আছর আলী) কোনো ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ ছাড়াই দেশি খাবার খাইয়ে ষাঁড় দুটিকে লালন-পালন করে বড় করেছেন। আশা করছি, আছর আলী তাঁর রাজা-বাদশাহর বিনিময়ে ন্যায্যমূল্য পাবেন।’