কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় এক কৃষক হত্যা মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আবীর পারভেজ এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কারশেদ আলম, তাঁর মেজো ভাই হামিদুল ইসলাম ও তাঁদের ভাতিজা রাসেল। এ মামলার অপর আট আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত কারশেদ আলম জাসদ কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক তৎকালীন জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী কারশেদ। তিনি কাজী আরেফ স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট বিকেলে লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে কৃষক শাহাজুলের মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষ। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় শাহাজুলের চাচাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম কয়েক দিন পরে কারশেদ আলম ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এই রায় দেন।
নিহত শাহাজুলের পরিবারের লোকজনের দাবি, বংশীয় ও সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। পরে ষড়যন্ত্র করে কারশেদের পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রকৃত আসামিদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, কৃষক শাহাজুল হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। হত্যা মামলায় অপর আট আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।