জঙ্গি ছিনতাই ও পুলিশ হত্যা মামলার আসামিকে ফেরত দিল ভারতীয় পুলিশ

ভারতে পলাতক থাকা ময়মনসিংহের ত্রিশালে তিন জঙ্গি ছিনতাই ও পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রহমতউল্লাহকে (৪৫) যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁকে ফেরত পাঠায় ভারতীয় পুলিশ।

হস্তান্তরের পর রহমতউল্লাহকে বেনাপোল বন্দর থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। পরে রাতেই নারায়ণগঞ্জ থানা-পুলিশের একটি দল বেনাপোল বন্দর থানা থেকে তাঁকে নিয়ে যায়।

বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ফেরত আসা রহমতউল্লাহর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তাঁকে নারায়ণগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসিন্দা তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২ এপ্রিল রাজধানী ঢাকার দারুসসালাম থানা ও ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানায় হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার আসামিদের একজন রহমতউল্লাহ। জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ও পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনার পর তিনি পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেন। পরে সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে কারাগারে পাঠান ভারতের আদালত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সরকার রহমতউল্লাহর ভারতে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে দুই দেশের সরকারের বিশেষ ট্রাভেল পারমিটে তাঁকে ফেরত আনা হয়।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১২ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে প্রিজন ভ্যানে গুলি চালিয়ে ও বোমা মেরে তিন জেমএমবি সদস্যকে ছিনিয়ে নেন তাঁদের সহযোগীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পুলিশের এক সদস্য নিহত ও একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

রহমতউল্লাহর সঙ্গে ভারতের কারাগারে থাকা আরও ছয়জনকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। ভালো কাজের প্রলোভনে অবৈধ পথে ভারতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন তাঁরা। বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাঁদের দেশে আনা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের ইমিগ্রেশন পুলিশ বাংলাদেশের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাঁদের হস্তান্তর করে।

বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থার জিম্মায় তাঁদের পাঠানো হয়েছে। পরিবারের স্বজনদের কাছে তাঁদের তুলে দেওয়া হবে। ফেরত আসা ছয়জনের মধ্যে একজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি পটুয়াখালী ও একজনের বাড়ি দিনাজপুরে।

বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, বিভিন্ন সময় কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়ে পুলিশের হাতে তাঁরা আটক হন। পরে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাঁদের দেশে ফেরত আনা হয়েছে। সাধারণ ডায়েরির মাধ্যমে তাঁদের একটি এনজিওর কর্মকর্তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।