তাহসীন বাহার ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের পোস্টার বেশি চোখে পড়ে। সেই তুলনায় পোস্টার কম মনিরুল হক ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিমের।
এক সপ্তাহ পরই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুসারীরা নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন। চলছে প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিংও। একই সঙ্গে প্রচারণায় একে অন্যের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন। গত শুক্রবার রাতে নগরের কাটাবিল এলাকায় এক মেয়র প্রার্থীর উঠান বৈঠকের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
মেয়র প্রার্থী ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক (টেবিলঘড়ি প্রতীক) অভিযোগ করেন, তাঁর উঠান বৈঠকে হামলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে। পোস্টার সরিয়ে ফেলার অভিযোগ আরেক প্রার্থী নূর উর রহমান মাহমুদ তানিমেরও (হাতি প্রতীক)। এই দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুরো নগরী তাহসীন বাহার (বাস প্রতীক) ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের (ঘোড়া প্রতীক) পোস্টারে সয়লাব। এই দুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচন হবে। এতে মেয়র পদে ওই চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসীন বাহার গতকাল শনিবার সকালে নগরের কাশারিপট্টি ও গ্লোবাল কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় গণসংযোগ করেন। বেলা ১১টায় টেবিলঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মো. মনিরুল হক নগরের ছাত্তার খান, জমজম টাওয়ার, কান্দিরপাড় এলাকার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিকেলে নগরের রাজাপাড়া এলাকায় উঠান বৈঠক, পদুয়ার বাজার ও পাথুরিয়া পাড়া এলাকায় প্রচারণা চালান। দুপুর ১২টায় নগরের ফৌজদারি মোড়, নিউমার্কেট ও কান্দিরপাড় জেনিসে প্রচারণা চালান ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম সকাল নয়টায় নগরের রাজগঞ্জ বাজার এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণা চালান। এরপর তিনি নগরের বিষ্ণুপুর, মুন্সেফ কোয়ার্টার, ভাটপাড়া, কাপ্তান বাজার, কমলাপুর, ধনাইতরি, দয়াপুর এলাকায় প্রচারণা চালান। প্রচারণায় চার মেয়র প্রার্থী নিজ নিজ প্রতীকের পক্ষে ভোট চান।
হামলার অভিযোগ, চেয়ার ভাঙচুর
টেবিলঘড়ি প্রতীকে (মনিরুল হক) কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, শুক্রবার বিকেলে নগরের কাটাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় টেবিল ঘড়ি প্রতীকের উঠান বৈঠকে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল বিন জলিলের নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থী মনিরুল।
মনিরুল হক বলেন, ‘সাইফুল বিন জলিলের নেতৃত্বে আমার উঠান বৈঠকের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। হামলা চালানো হয়। আশা করি রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচনী আচরণবিধিমালা মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাইফুল বিল জলিল বলেন, ‘আমি কোনো চেয়ার ভাঙচুর করিনি। চেয়ার ভাঙচুরের নির্দেশ দিইনি। শুনেছি টেবিলঘড়ি ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন এই কাজ করেছেন।’
জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কাটাবিল এলাকায় উঠান বৈঠকের চেয়ার ভাঙচুর হয়েছে। সেটি আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ
প্রতীকের বরাদ্দের পর থেকে কুমিল্লা নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসীন বাহার ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে। নগরের কান্দিরপাড়, নিউমার্কেট, পুবালী চত্বর, বাদুরতলা ডায়াবেটিক হাসপাতাল সড়ক, রাজগঞ্জ, চকবাজার, টমছমব্রিজ এলাকায় গেলে এই দুই প্রার্থীর পোস্টারই কেবল চোখে পড়ে। সেই তুলনায় পোস্টার কম দেখা গেছে মো. মনিরুল হক ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিমের।
এ প্রসঙ্গে মনিরুল হক বলেন, ‘আমার পোস্টার সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তবে পোস্টারে ভোট আইত না। মানুষ বিচার-বিবেচনা কইরা ভোট দিবে।’ নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, ‘আমার পোস্টার বিভিন্ন এলাকা থেকে রাতের আঁধারে সরিয়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়।’