নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো আসামিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার পর পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি মো. মামুনকে (২৮) বগুড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মো. মামুন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সাবরুল সোনারপাড়া গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিক ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় মামুন নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মো. মামুন। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৮ মাস ধরে তিনি নরসিংদী জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গাবতলী মডেল থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার পর অনেক বন্দী পালিয়ে যান। ওই দিন হত্যা মামলার আসামি মো. মামুনও কারাগার থেকে পালিয়ে বগুড়ায় যান। কারফিউয়ের মধ্যেই ভ্যান, ইজিবাইক ও ট্রাকে চড়ে দুই দিন পর তিনি বগুড়ায় পৌঁছান। এরপর গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে থাকেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. মামুনকে গাবতলী মডেল থানা হেফাজত থেকে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নরসিংদী জেলা কারাগারের একাধিক কারারক্ষী ও এলাকাবাসী বলেন, শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে হামলাকারীরা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে কারাগারের দুই দিকের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় পেট্রলবোমা মারা হয়। কারাগারের ভেতরে নানা জায়গায় আগুন ধরে যায়। হামলাকারীরা কারারক্ষীদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া চাবি দিয়ে বন্দীদের অনেকগুলো কক্ষের তালা খুলে দেন। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা আসামি ছিনিয়ে নেন। এরপর একে একে ৮২৬ বন্দী পালিয়ে যান। এ সময় অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কারাগারে যাঁরা হামলা করেন, তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাঁদের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন কারারক্ষীরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারারক্ষীরা নিরাপদ অবস্থানে চলে যান।

এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারাগারে হামলা ও কারাবন্দীদের পালানোর ঘটনায় জেল সুপার আবুল কালাম আজাদ ও জেলার কামরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।