নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে ওই যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত যুবকের নাম আহমেদুর কবির (৩৭)। তিনি শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও গ্রামের মৃত আবদুস সালামের ছেলে। গত রোজার ঈদের আগপর্যন্ত তিনি মাধবদীর একটি কারখানায় চাকরি করতেন। সেখানে কাজ কমে যাওয়ায় চাকরিচ্যুত হন। এর পর থেকে তিনি বাড়িতে থেকে নতুন চাকরির সন্ধান করছিলেন।
আহমেদুর স্ত্রী রেণু বেগম, ১২ ও ৫ বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া ইউনিয়নের আগানগর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি নিজের বাড়িতে ছিলেন।
আহমেদুর কবিরের ছোট ভাই মেনন মোল্লা বলেন, ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়ার সময় তিনিও বাড়িতে ছিলেন। যে তিনজন তাঁর ভাইকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে গেছেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিচিত। পুলিশের কাছে তাঁদের নাম ও পরিচয় জানিয়েছেন।
স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত নিজের ঘরেই অবস্থান করছিলেন আহমেদুর কবির। ওই সময় স্থানীয় তিনজন যুবক (যাঁরা একসঙ্গে চলাফেরা করতেন) তাঁর ভাইয়ের কাছে আসেন। তাঁরা আহমেদুরের ঘরে বসে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে গরমের কারণে তাঁরা আহমেদুরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ৈগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে যান। তাঁর বাড়ি থেকে বিদ্যালয়টির দূরত্ব দুই মিনিটের হাঁটা পথ। রাতে আহমেদুর আর বাড়ি ফেরেননি। আজ সকালে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে তাঁর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
মেনন মোল্লা বলেন, ২০১৪ সালে একই এলাকায় জালাল ও খোরশেদ নামের দুই ভাই খুন হন। তাঁদের চাচাতো ভাই আহমেদুর কবির ছিলেন ওই হত্যা মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী। ওই মামলায় সাক্ষী হওয়ায় আহমেদুরকে এভাবে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁকে হত্যার অন্য কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার কারণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহমেদুর কবির নিহত হয়েছেন। তাঁর লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার সময় তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।