ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় একটি প্রাচীন বটগাছ হেলে পড়ছে। গাছটি রক্ষার জন্য চার মাস আগে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা মানববন্ধন করেছেন। এ ছাড়া বন বিভাগে আবেদন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের গাংগাইল গ্রামের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের পশ্চিম দিকে গাছটি অবস্থিত। সরেজমিনে দেখা যায়, গাংগাইল ফিশারি মোড় থেকে একটি পিচঢালা সড়ক সুরাশ্রম গ্রামের দিকে চলে গেছে। ফিশারি মোড় থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলে সড়কের একটি পুকুরের পাশে আছে বিশাল বটগাছ।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, চার মাস আগে বটগাছটি পাশের পুকুরের দিকে হেলে পড়ে। সড়ক নির্মাণের সময় গাছের কয়েকটি শিকড় কাটা পড়ে। এর পর থেকে গাছটি একটু একটু করে পশ্চিম পাশে থাকা পুকুরের দিকে হেলতে শুরু করে। এখন গোড়ার মাটিতে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
গয়েশপুর গ্রামের পল্লিচিকিৎসক আবদুর রহিম বলেন, ‘গাছটি দেখতে দেখতে আমরা বড় হয়েছি। আমাদের জীবনের নানা ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে এই বটগাছ। অনেকে নিজের গ্রাম বা বাড়ির ঠিকানা বলার সময় গাছের অবস্থান উল্লেখ করেন। চোখের সামনে গাছটি এভাবে নষ্ট হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের।’
গাছটি রক্ষার জন্য গত আগস্টে উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের গাংগাইল, গয়েশপুর, সুরাশ্রম ও পংকরহাটি গ্রামের বাসিন্দারা মানববন্ধন করেছিলেন। তাঁরা সেই সময়ে নান্দাইল ইউএনও মোহাম্মদ আবুল মনসুরের কাছে গাছটি রক্ষার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর তিনি বদলি হয়ে যান।
নান্দাইল সদরের বাসিন্দা ও সমাজকর্মী মো. সাইদুর রহমান বলেন, গাছটি রক্ষা করার জন্য গত আগস্ট মাসে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বটগাছের পাশের পুকুরের মালিক গাংগাইল গ্রামের মো. জাকির হোসেন বলেন, তাঁর পুকুরের পাড় এমনিতেই ভেঙে পড়ছে। গাছের হেলে পড়া ঠেকাতে পুকুরের পাড়ে মোটা করে পার্শ্ব দেয়াল স্থাপন করতে হবে। সেই দেয়াল নির্মাণ করার জন্য তিনি জমি দিতে রাজি আছেন। তারপরও গাছটি বেঁচে থাকুক, তিনি তা চান।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নান্দাইল উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, তিনি কয়েক মাস আগে নান্দাইলে যোগ দিয়েছেন। বটগাছটি দেখার পর এ বিষয়ে কী করা যায়, তা ভেবে দেখবেন।