ময়মনসিংহ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে জালিয়াত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৬০০ মিটার দৌড় ইভেন্টে অংশ না নিলেও বাইরে থেকে ‘কৃতকার্য’ সিল দিয়ে টাকা নেয় চক্রটি।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মফিজুল হক ওরফে এবাদুল (৫৪) ও রাকিবুল ইসলাম ওরফে ইমন (১৯)। মফিজুলের বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর গ্রামে ও রাকিবুল একই উপজেলার মশাজানী গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠিত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় দিনের কার্যক্রম চলছিল। ওই সময় ‘ড্র্যাগিং’ ইভেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লক্ষ করেন, কয়েকটি পিইটি ফরমে তুলনামূলক বড় ফন্ট ব্যবহার করে তৈরি করা ‘কৃতকার্য’ সিল দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের ইভেন্ট থেকে সরিয়ে পৃথক স্থানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মোট আট প্রার্থীর মধ্যে সবাই জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি পুলিশ লাইনসের সীমানার বাইরে থেকে অর্থের বিনিময়ে সবার ফরমে সিল দিয়ে দেন। ১৬০০ মিটার দৌড় ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করেই ‘কৃতকার্য’ মর্মে এই সিল দেওয়া হয়। এর ফলে ওই আট প্রার্থীকে টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষায় অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনার পর থেকে নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশ গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও পাগলা থানা-পুলিশ গতকাল বুধবার অভিযান চালিয়ে মফিজুল হক ও রাকিবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, সিলটি প্রস্তুতকারী হিসেবে কাজ করেন মফিজুল হক। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তিনি পুলিশকে জানান, তাঁর প্রতিবেশী রাকিবুল ইসলাম একটি ‘কৃতকার্য’ সিল তৈরি করতে বললে তিনি ময়মনসিংহ নগরের পুরাতন পুলিশ ক্লাব রোডের একটি দোকান থেকে সিল তৈরি করেন। রাকিবুল ইসলাম নিজেও পুলিশ কনস্টেবল প্রার্থী ছিলেন। তাঁর সহযোগিতায় আট পিইটি ফরমে ‘কৃতকার্য’ সিল দেওয়া হয়। পরে তাঁদের কাছ থেকে সেই সিলটিও জব্দ করা হয়।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সে মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।