ফিরোজুর রহমান
ফিরোজুর রহমান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৩

এবার ফিরোজুরের বিরুদ্ধে ভোটারের ভুয়া স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর–বিজয়নগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ত্যাগ করা ফিরোজুর রহমানের বিরুদ্ধে এবার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকায় ভুয়া স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার দুপুরে সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ এইচ মাহাবুল আলম দুটি লিখিত আবেদন করে ফিরোজুরের মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবি জানান।

তবে অভিযোগ দেওয়ার আগেই ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকায় ত্রুটি থাকায় ফিরোজুরের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

ফিরোজুর রহমান সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের টানা ২৬ বছরের চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। কিন্তু পাননি। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকতাদির চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীকে মোট ভোটারের ১ শতাংশের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেন। সেখানে তিনি সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জগৎসার গ্রামের মো. রুহুল আমীন নামের একজনের স্বাক্ষর যুক্ত করেছেন। তিনি স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজ নামের স্বাক্ষর আছে। কিন্তু ফিরোজুর তাঁর স্বাক্ষর সমর্থনপত্রে না নিয়ে রুহুলের নামের জায়গায় ভুয়া ও জাল টিপসই দিয়ে স্বাক্ষর তালিকায় সংযুক্ত করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী আইন ভঙ্গ করেছেন। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আবশ্যক।

আরেকটি অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ফিরোজুরকে সমর্থনকারী ভোটারের স্বাক্ষর তালিকায় থাকা সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মীর বাইজিদ হোসাইন লিখিত আবেদন করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন, তিনি স্বাক্ষর করেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তদন্তে বাইজিদের স্বাক্ষর না মিলায় আজ যাচাই-বাছাইয়ের সময় ফিরোজুরের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে ওই দুই অভিযোগে ফিরোজুরের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

জানতে চাইলে ফিরোজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাইজিদকে সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারী তুলে নিয়ে রাতে ইউএনওর কার্যালয়ে হাজির করেন। সেখানে বাতি নিভিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইউএনওর স্বাক্ষর মেলেনি দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইউএনও মিথ্যা বলেছেন। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরাতেই এমন পরিকল্পনা হচ্ছে। কিন্তু আমি আইনের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যাব।’