দিনাজপুর সদর উপজেলার সদরপুর গ্রামে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা খেতের মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর চলাচলের সড়ক বন্ধ না করার এবং ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন সীমানাপ্রাচীরের উচ্চতা কমানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আজ শনিবার সকালে এসব দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। এ সময় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ সড়ক বন্ধের প্রতিবাদে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে উপস্থিত হন। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধন শেষে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।
৪৭ হেক্টর জমি নিয়ে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা প্লট। সম্প্রতি তিন কিলোমিটার সুরক্ষাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রাচীরটি স্থানভেদে ছয় থেকে আট ফুট উঁচু হবে।
প্রাচীর ঘেঁষে এলাকাবাসীকে রাস্তা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে উল্লেখ করে দিনাজপুর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কটন অ্যাগ্রোনমিস্ট এ এইচ মো. কায়কোবাদ প্রথম আলোকে বলেন, প্লটের মধ্য দিয়ে যাওয়া ৩০০ মিটার সড়কটির মুখ বন্ধ না করতে স্থানীয় ব্যক্তিরা আবেদন করেন। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত অন্য পাশের কাজ চলমান। এত উঁচু প্রাচীর নির্মাণের প্রয়োজন আছে কি না, জানতে চাইলে মো. কায়কোবাদ বলেন, প্রায় সাত কোটি টাকার কাজটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তাঁরা যেভাবে নকশা করেছেন, সেভাবেই কাজ হচ্ছে।
ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা ক্ষেতের মধ্য দিয়ে মহাসড়ক থেকে নেমে গ্রামে চলে গেছে প্রায় ৩০০ মিটার লম্বা একটি কাঁচা সড়ক। তুলা উন্নয়ন বোর্ড সড়কটি বন্ধ করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ করছে। প্রাচীর নির্মাণ শেষ হলে এলাকাবাসীর চলাচলের সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ওই সড়ক দিয়ে সদরপুর, হাজীপাড়া, মোল্লাপাড়া, তেলীপাড়া ও মণ্ডলপাড়া গ্রামের দুই হাজারের বেশি মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। ১৯৮১ সালে তুলা উন্নয়ন বোর্ড সদরপুরে জমি অধিগ্রহণ করে। ওই সময় অনেকের আবাদি জমি ও বসতবাড়ি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জমি কিনে বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। পাড়া থেকে মহাসড়কে আসতে বিকল্প পথ না থাকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করে আসছেন গ্রামবাসী। নতুন ভূমি জরিপেও সড়কটি গ্রামের সঙ্গে যুক্ত করে রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে।
প্রাচীর ঘেঁষে মাত্র আড়াই ফুট চওড়া রাস্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে এক কিলোমিটার ঘুরে গ্রাম থেকে মহাসড়কে আসতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এতে করে গ্রামবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। কৃষিপণ্য বাজারে আনতেও সমস্যার সম্মুখীন হবেন তাঁরা। আট ফুট উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করায় গ্রামে আলো-বাতাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। প্রাচীরটি চার ফুট উঁচু করার দাবি স্থানীয় ব্যক্তিদের।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, ‘সড়কটি বন্ধ হলে এলাকাবাসী দুর্ভোগে পড়বেন। এটি সচল রাখতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীর সঙ্গে থাকব।’