শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনের ছাত্রত্ব বাতিল

নির্যাতনের শিকার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুকুল আহমেদ (মাঝে)
ফাইল ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুকুল আহমেদের ওপর নির্যাতন চালানোর দায়ে দুজনের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার ওই দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটি।

ওই দুজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিদ মঞ্জু ও সিহাব উদ্দিন। এই দুজন ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। একই অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের দশম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী আহাদ খানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য ও দুজন শিক্ষক নাম গোপন রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে রোববার বিকেলে শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়টি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।

গত বছরের ১২ অক্টোবর রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের একটি কক্ষে নিয়ে ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুকুলকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। পিটিয়ে মুকুলের বাঁ হাত ভেঙে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হামলার দায় এড়াতে মুকুলকে ‘শিবির নেতা’ দাবি করে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন হামলাকারী ও তাঁদের সহযোগীরা।

নির্যাতনকারীদের শাস্তি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুকুল। সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ যে আমার ওপর যে বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার সুষ্ঠু বিচার পেয়েছি। আমি চাই আর যেন কোনো নিরীহ শিক্ষার্থী এমন বর্বরতার শিকার না হন।...আমি কোনো দিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হইনি। আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়েছে। তবে শাস্তি হওয়ার পরও আমি শঙ্কায় আছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাইছি। নির্যাতনকারীরা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় এত দিন আমি বিচার পাইনি।’

এর আগে ১৫ আগস্ট প্রথম আলোর অনলাইনে ‘ছাত্রলীগের নির্যাতনের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন মুকুল, পাননি বিচার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনার বিচারের ব্যাপারে তৎপর হয়ে ওঠে। চার দিনের মাথায় দ্রুত এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিল সিন্ডিকেট।