সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের ব্লক ভেঙে নর্দমা পরিষ্কার করা হয়েছে। ভাঙাচোরা ফুটপাতে হাঁটতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। ছবিটি গত রোববার দুপুরে সিলেট নগরের বারুতখানা এলাকা থেকে তোলা
সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের ব্লক ভেঙে নর্দমা পরিষ্কার করা হয়েছে। ভাঙাচোরা ফুটপাতে হাঁটতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। ছবিটি গত রোববার দুপুরে সিলেট নগরের বারুতখানা এলাকা থেকে তোলা

সিলেট সিটি করপোরেশন

ভাঙা ফুটপাতে চলাচলে ভোগান্তি

প্রায় দুই মাস আগে ফুটপাতের পেভিং ব্লক ভেঙে স্ল্যাব তুলে ময়লা পরিষ্কার করা হয়। পরে ফুটপাতের ভাঙা অংশ ঠিক করা হয়নি।

সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন ফুটপাতে বসানো হয়েছিল পেভিং ব্লক (বিশেষ ইট দিয়ে পাকা করা)। সম্প্রতি এসব ব্লক ভেঙে নর্দমা পরিষ্কারের কাজ করা হয়েছে। ময়লা পরিষ্কারের পর আবার ভাঙা ব্লকগুলো ফেলে রাখা হয়েছে নর্দমার ওপরই ফুটপাতে। এতে পথচারীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ জন্য সিলেট সিটি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন পথচারী এবং নগরের বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে পেভিং ব্লকগুলো ফুটপাতে বসানো হয়েছিল। এর আগে নির্মিত নর্দমাগুলো পরিষ্কার করার জন্য ১০ থেকে ১৫ মিটার পরপর বসানো হয় স্ল্যাব। পেভিং ব্লকগুলো বসানোর সময় এসবের সঙ্গে ফুটপাতের নর্দমা পরিষ্কারের জন্য রাখা স্ল্যাবও জোড়া লাগানো হয়।

বর্ষা মৌসুমের আগে নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা না হলে সেখানে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতো। এ জন্য সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। এতে নর্দমার ওপর বসানো স্ল্যাব তুলতে গিয়ে ব্লকগুলো ভাঙতে হয়েছে।
নূর আজিজুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী, সিলেট সিটি করপোরেশন

সিলেট নগর ঘুরে দেখা গেছে, নগরের জিন্দাবাজার, পূর্ব জিন্দাবাজার, বারুতখানা, জেল রোড এলাকায় ফুটপাতে পেভিং ব্লক বসিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নগরের বন্দরবাজার, দক্ষিণ সুরমা এলাকায়ও এসব পেভিং ব্লক বসানো হয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে সিটি কর্তৃপক্ষ এসব পেভিং ব্লক ভেঙে স্ল্যাব তুলে ময়লা পরিষ্কার করেছে। পরে ভাঙা পেভিং ব্লকগুলো আবার স্ল্যাবের ওপরই ফেলে রাখা হয়েছে। ভাঙা পেভিং ব্লক ফুটপাতে হাঁটার সময় পথচারীদের জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় পা পিছলে ঘটছে দুর্ঘটনা।

সিলেট নগরের জেল রোড এলাকায় আবুল কালাম আজাদ নামের এক চা বিক্রেতা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দোকানের সামনে দুটি জায়গায় ব্লক ভেঙে রাখা হয়েছে। এতে তাঁর সামনেই অনেকে দুর্ঘটনায় পড়ছেন। বিশেষ করে বয়স্ক এবং নারীরা এসব ভাঙা ব্লকে পা পিছলে বেশি আহত হচ্ছেন। বিষয়টিকে তিনি সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনা হিসেবে দেখছেন।

নগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় তিন মাস আগে নর্দমার ওপর বসানো ব্লক ভেঙে নর্দমা পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও ভাঙা ব্লকগুলো ফুটপাত থেকে সরানো হয়নি। নগরের বারুতখানা দিয়ে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করা পথচারী আরিফুজ্জামান বলেন, দুই দিন আগে তিনি তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ফুটপাতের ওপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ব্লকে পা দিয়ে উল্টে পড়েছিলেন। এতে তাঁর হাতে ও পায়ে বেশ কিছু জায়গা ছিলে গেছে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ একলিম আবদীন প্রথম আলোকে বলেন, গত ১০ বছরে নর্দমাগুলো থেকে ময়লা পরিষ্কার করা হয়নি। বর্ষা মৌসুমের আগে নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা না হলে সেখানে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতো। এ জন্য সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। এতে নর্দমার ওপর বসানো স্ল্যাব তুলতে গিয়ে ব্লকগুলো ভাঙতে হয়েছে।

স্ল্যাব এবং ব্লক অপরিকল্পিতভাবে বসানো যায় কি না, এমন প্রশ্নে একলিম আবদীন বলেন, বিষয়টি প্রকৌশল বিভাগের। এ জন্য এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে চান না। তবে ভাঙা ব্লকের কারণে দুর্ঘটনার জন্য তিনি পথচারীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।