সালাম মুর্শেদীর পক্ষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন, আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতির দাবি

খুলনা প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা
ছবি: প্রথম আলো

খুলনা-৪ আসনের (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মারধর, গালাগাল ও নির্যাতন করার যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই দাবি করেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের নেতা-কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সহসভাপতিসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গতকাল সোমবার একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্যাতন ও গালাগাল করার অভিযোগ করেছিলেন।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফ ম আবদুস সালাম। তিনি বলেন, বহুমুখী চক্রান্তের অংশ হিসেবে সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার-কাল্পনিক তথ্য প্রচার করছেন কামাল উদ্দীন। তিনি দলের উপজেলা সভাপতির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ অপপ্রচার করায় উপজেলার প্রত্যেক নেতা-কর্মীর মনে মারাত্মক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আবদুস সালাম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কামাল উদ্দীন একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষালম্বন করেন। তিনি শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনই নয়, গত জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এ কারণে তাঁর এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর আশানুরূপ ফলাফল হয়নি। এ ছাড়া বয়সের ভারে তিনি একার্থে স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি দীর্ঘদিন দলের একই পদে অবস্থান করার পরও দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে প্রত্যাখ্যানের গণ দাবি উঠেছে। আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলাকে তিনি তাঁর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভুলণ্ঠিত করেছেন। কামাল উদ্দীন সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর বিপক্ষে যেসব অভিযোগ তুলেছেন, তার কোনো দালিলিক প্রমাণ দেখাতে পারবেন না তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে কামাল উদ্দীনের নানা অনিয়মের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলা হয়, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সম্পদ আহরণের স্পৃহা তাঁকে পেয়ে বসেছে। ঘাটভোগ ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির জমি দখল করে অবৈধভাবে ইটের ভাটা নির্মাণ করেছেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী রূপসা উপজেলার তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যকরী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কামাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংসদ সদস্য তাঁর লোকজন দিয়ে এসব সংবাদ সম্মেলন করাচ্ছেন। আসলে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সংসদ সদস্য আমার ওপর ক্ষেপেছেন।’ দলীয় পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরা অব্যাহতি দেওয়ার কে? দলীয় সম্মেলনে নেতা-কর্মীরা যদি আমাকে না চান, তাহলে পদে থাকব না।’