ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু) আসনটি শরিক দলকে দেওয়া হবে বিএনপির অস্তিত্বে আঘাত করা, এমনটাই মনে করছেন এখানকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। এই আসনে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে সহযোগিতা করতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো চিঠি নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমন আলোচনা চলছে।
ঝিনাইদহের এই আসন বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ সালের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আসনটি বিএনপির দখলে ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও আসনটি ছিল বিএনপির।
রাশেদ খানের বাড়ি ঝিনাইদহ সদরের মুরারিদগ গ্রামে। ২২ অক্টোবর তাঁকে সহযোগিতা করতে বিএনপির নেতা রিজভী চিঠি পাঠানোর পর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, সামনের নির্বাচনে ধানের শীষে মনোনয়ন পেতে পারেন রাশেদ খান। তাঁরা খানিকটা হতবাক। তাঁরা বলছেন, রাশেদ ঢাকায় রাজনীতি করেন। এলাকায় তিনি অপরিচিত ব্যক্তি। ঝিনাইদহে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। ফলে তাঁকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করা যায়, তবে সংসদ নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দিলে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন জেলা বিএনপির একাধিক নেতা। তাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেতে চান। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক, তাঁকে অবশ্যই বিএনপির হতে হবে। তা না হলে বিএনপির দুর্গে এটি আঘাতের মতো হবে।
চিঠির বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেটা কোনো মনোনয়নপত্র নয়। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনায় বিএনপি থেকে রাশেদ খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কিংবা এই আসন তাঁর জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে, এমনটি বলা হয়নি।
জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, এই আসন বিএনপির ঘাঁটি। এখানে ভিন্ন চিন্তা সঠিক হবে না। ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিএনপির নেতা-কর্মীদের শেষ আশ্রয়স্থল জেলা বিএনপির সভাপতি। তাঁকে বাদ রেখে অন্য কাউকে দলের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা মানতে পারবেন না। যিনি নেতা, সবাই তাঁকেই জাতীয় সংসদে দেখতে চান।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল বলেন, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগী দল হিসেবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় রাশেদকে সহযোগিতা করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে ঝিনাইদহ বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তিনি এই চিঠি নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এই চিঠি প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ বলেন, চিঠি নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি নির্বাচনী কোনো চিঠি নয়, দলীয় কাজ করার ক্ষেত্রে রাশেদ খানকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাঁরা সেভাবেই কাজ করে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।