বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর বগুড়া সদরের এরুলিয়া বাজার থেকে একতারা প্রতীকে প্রচার শুরু করেছিলেন। প্রচারের শেষ দিনে আজ সোমবার ঠিক একই এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শেষ করলেন হিরো আলম।
স্থানীয় লোকজন জানান, আজ সকালে হিরো আলম কর্মীদের নিয়ে এরুলিয়া বাজারে আসেন। সেখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা তাঁর ভক্তদের সঙ্গে কথা বলেন। অনেকে হিরো আলমের জন্য ফুল-মিষ্টি নিয়ে এসেছেন। কেউবা আবার নিয়ে এসেছেন নিজেদের খেত-খামারের ফল। কেউ কেউ নিয়ে এসেছেন হিরো আলমের নির্বাচনী প্রতীক ‘একতারা’।
এরুলিয়া বাজারে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় হিরো আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের কথা শোনা যাচ্ছে। তবে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবেন ভোটাররা। সুষ্ঠু ভোট হলে দিন শেষে বিজয়ের মালা আমিই পরব।’
হিরো আলম বলেন, হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর নিজের জন্মভূমি এরুলিয়া থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছিলেন। আজ নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন এই এলাকায় অবস্থান করে ভোটারদের কাছে ভোট চাইবেন। তিনি আরও বলেন, ‘এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় আমার নিজের ভোটকেন্দ্র। ভোটের দিন সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেব। এরপর দুই নির্বাচনী এলাকার ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যাব। আমার সঙ্গে থাকবেন চিত্রনায়িকা রিয়া মনি।’
শেষ মুহূর্তে ভোটের সার্বিক পরিবেশ দেখে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হিরো আলম। তিনি বলেন, বগুড়া-৬ আসনে নৌকার কর্মী ছাড়া কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেওয়া হবে না বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের এক নেতার এ ধরনের বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। এতে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় আছেন। উপনির্বাচনে কারচুপির প্রশ্রয় দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করলে নির্বাচন কমিশন নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের আর কেউ বিশ্বাস করবে না।
ভক্তদের ভালোবাসায় মুগ্ধ ও অভিভূত হওয়ার কথা জানিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘যার যা সামর্থ্য, তাই নিয়ে ভক্তরা আমার নির্বাচন দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে এসেছেন। নিজের টাকা খরচ করে তাঁরা বগুড়ায় এসেছেন, থাকা-খাওয়ার খরচ নিজেরা জোগাড় করে নিয়ে এসেছেন। ভোটের দিন পর্যন্ত তাঁরা বগুড়ায় অবস্থান করবেন। বিজয় দেখে ঘরে তাঁরা ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।’
চলচ্চিত্র অঙ্গনের কেউ খোঁজখবর রাখছেন কি না জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, চলচ্চিত্র অঙ্গনের মুরব্বি থেকে শুরু করে সহশিল্পী অনেকেই নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। অনেকেই ফোন করে উৎসাহ দিচ্ছেন।
দুই নির্বাচনী এলাকায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে এজেন্ট দিতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ভোটকক্ষে একতারা প্রতীকের এজেন্ট থাকার জন্য কয়েক হাজার তরুণ যোগাযোগ করেছেন। এজেন্ট কোনো সমস্যা হবে না। তবে সব কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া হবে।
প্রচারের শেষ দিনে চমক দেখানোর কথা বলেছিলেন হিরো আলম। হেলিকপ্টারে করে চলচ্চিত্র তারকাদের নিয়ে প্রচার চালানোর কথাও বলেছিলেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভক্তদের সামাল দিতে নিজেই হিমশিম খাচ্ছি। চলচ্চিত্র তারকাদের নিয়ে এলে কোনোভাবেই মানুষ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। নির্বাচনী মাঠ এমনিতেই চাঙা। তাই চলচ্চিত্র তারকাদের প্রচারণার মাঠে নামানোর দরকার হবে না। তবে ভোটের দিন চিত্রনায়িকা ছাড়াও চলচ্চিত্র তারকারা আমার সঙ্গে থাকতে পারেন।’