ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রোমা আক্তারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসীসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে তাঁরা উপজেলা পরিষদে ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর আগে বিক্ষোভকারীদের আসার খবর পেয়ে কার্যালয় থেকে কৌশলে সরে যান তিনি। আজ রোববার দুপুর ও বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
রোমা আক্তার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের অর্থ সম্পাদক নাসির মিয়ার স্ত্রী। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতা রোমা আক্তার ঘোড়া প্রতীকে ৩৩ হাজার ৯০১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয় বন্ধ ছিল। চেয়ারম্যান রোমা আক্তারসহ অন্যরা ছিলেন আত্মগোপনে। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদে নিজ কার্যালয়ে যান রোমা আক্তার। তখন বাইরে থেকে একজন মুঠোফোনে কার্যালয়ের দিকে বিক্ষোভকারীরা আসছেন জানিয়ে তাঁকে কার্যালয় ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই কার্যালয় থেকে সটকে পড়েন। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় লোকজনসহ উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদে জড়ো হন। তাঁরা উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান এবং কর্মকর্তাদের দেওয়া তালার ওপর আরেকটি তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিক্ষোভকারীরা কোটা আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নিহত নাসিরনগরের গোয়ালনগর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মোনায়েল আহমেদের হত্যার বিচারও দাবি করেন। এদিকে বিকেল চারটার দিকে বিক্ষোভকারীরা আবার উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
রোমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে আমি কার্যালয়ে যাই। এ সময় উপজেলা পরিষদের কর্মচারী হাসান রাশেদ ফোন করে জানান, উপজেলার কলেজ মোড়ে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে আটক করেছেন এবং আমাকে কার্যালয় থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। কারণ, বিক্ষোভকারীরা নাকি কার্যালয়ে তালা ঝোলাবেন। আমি সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানিয়েছি। কার্যালয়ে থাকলে অপমানজনক কিছু হতে পারে ভেবে চলে যাই। সকালে ও বিকেলে তারা অবস্থান কর্মসূচি করে আমার পদত্যাগ ও ফাঁসি দাবি করেছে। কার্যালয়ে নামফলক ভাঙচুর করেছে। তারা আমাদের তালার ওপর কার্যালয়ে আরেকটি তালা ঝুলিয়েছে।’
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অমিতাভ দাস তালুকদার জানান, উপজেলা পরিষদের সামনে আন্দোলনের খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিক্ষোভকারীরা চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সেখান থেকে চলে যান।