পথের ধারে পড়ে রয়েছে অজানা পাউডারের স্তূপ। গাড়ি চলার সঙ্গে সঙ্গে পাউডারগুলো বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের শরীরে ঢুকছে পাউডারগুলো। আজ সকাল আটটার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়ক এলাকায়
পথের ধারে পড়ে রয়েছে অজানা পাউডারের স্তূপ। গাড়ি চলার সঙ্গে সঙ্গে পাউডারগুলো বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের শরীরে ঢুকছে পাউডারগুলো। আজ সকাল আটটার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়ক এলাকায়

সীতাকুণ্ডের রাস্তায় রাস্তায় ছড়ানো সাদা পাউডার, বাতাসে উড়ে ঢুকছে শরীরে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়কের পথে পথে অজানা সাদা পাউডারের স্তূপ জমে আছে। পাউডারগুলো সড়কের ওপরে থাকায় গাড়ি চলাচলের সময় উড়তে থাকে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ব্যক্তিদের শরীরে ঢুকে পড়ছে।

গত এক সপ্তাহ আগে এসব পাউডার সড়কের পাশে ফেলে যাওয়া হয়। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, পাউডারগুলো জাহাজভাঙা কারখানার। সেখান থেকে এনে সড়কের পাশে এসব ফেলে যাওয়া হয়। আবার কেউ বলছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো রাসায়নিক বন্দর থেকে এনে ফেলে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, সাদা পাউডার নষ্ট হয়ে যাওয়া চুনাপাথর। তবে পাউডারগুলো আসলে কী, তা নিশ্চিত হতে পারেনি কেউই। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া সড়কে পড়ে থাকা পাউডার কী ধরনের, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়কের সীতাকুণ্ড অংশের লতিফপুর থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর থানাধীন এলাকা পর্যন্ত সড়কের পাশে উন্মুক্ত অবস্থায় পাউডারের স্তূপ পড়ে রয়েছে। ১২ কিলোমিটার সড়কের অন্তত ১০ স্থানে এ রকম স্তূপ দেখা গেছে। সড়ক দিয়ে ভারী কোনো গাড়ি চলাচলের সময় গাড়ির পেছনে পাউডার উড়তে দেখা যায়।

কথা হয় স্থানীয় দোকানি মোহাম্মদ ডালিমের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ আগে ভোররাতে একটি ড্রাম ট্রাক তাঁর দোকানের কাছাকাছি এলাকায় পাউডারগুলো ফেলে রেখে যায়। তিনি গাড়িচালকের সঙ্গে কথা বলার জন্য এগিয়ে গেলে, চালক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ফলে কারা পাউডার ফেলছে এবং কী ধরনের পাউডার, তা জানতে পারেননি। বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসা পাউডার তাঁর নাকে মুখে ঢুকে যাচ্ছে। কিন্তু তিনি দোকান ছেড়ে তো আর কোথাও যেতে পারছেন না।

যেখানে পাউডার পড়ে আছে, সে পথে গাড়ি চালাতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন চালকেরা। অটোরিকশাচালক ধনোতোষ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটিতে নাক চেপে গাড়ি চালাতে হয়। না হলে পাউডার নাকের ভেতর ঢুকে যায়। কারা এই পাউডার ফেলে গেছেন, তা তিনি জানেন না।

স্থানীয় এক বাসিন্দা রুবি আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর তিনটি গরু আছে। তিনি সকালে গরুগুলো এ সড়কের পাশে ছেড়ে দিয়ে বাসায় সংসারের অন্য কাজ করতেন। একদিন গরুগুলো পাউডারের ঘাস খাওয়ার পর আর ঘাস এনে দিলেও খাচ্ছে না।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের পাশে পড়ে থাকা পাউডারগুলো কী ধরনের এবং সেটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ছাড়া নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে ক্ষতিকর হোক বা না হোক আগে পাউডারগুলোকে সড়ক থেকে সরাতে হবে। পাউডারগুলো সড়কের পাশে কারা ফেলছেন, তা নিশ্চিত না হওয়া গেলে পরিবেশ ক্ষতি করার অপরাধে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।