নাশকতার মামলায় ‘আত্মগোপনে থাকা’ বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অন্তত ৫০ দিন পরে প্রকাশ্যে এসেছেন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ‘ডামি নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন’ এর পক্ষে জনমত গঠন করতে যশোর শহরের দড়াটানা ও জেনারেল হাসপাতাল মোড়ের বিভিন্ন দোকানে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ করেন তিনি। এর পর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
গত ২৮ অক্টোবরের পর অনিন্দ্য ইসলামের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চারটি মামলা করে পুলিশ। এসব মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। প্রায় ৫০ দিন পরে তিনি প্রকাশ্যে দলীয় কর্মসূচিতে সরাসরি অংশ নেন। তাঁর সঙ্গে যশোরের বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছিলেন।
বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের পর নতুন করে গায়েবি নাশকতার চারটি মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দলীয় হরতাল-অবরোধের ঝটিকা মিছিলে অংশ নিতে পেরেছি। এরপর আর প্রকাশ্যে থাকতে পারিনি। সেই থেকে আত্মগোপনে আছি। গতকাল প্রচারপত্র বিতরণ করার পর পুলিশ আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমার আত্মীয়স্বজনদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে গিয়ে আমাকে পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, অনিন্দ্য ইসলামের নামে যশোর, ঢাকা ও নড়াইলে মোট ৬৪টি মামলা আছে। এর মধ্যে চলমান হরতাল অবরোধে চারটি মামলা হয়েছে যশোরে। ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতার আসামি তিনি। চলমান হরতাল অবরোধে যশোরে ৩০টি মামলায় আসামি করা হয়েছে এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার আতঙ্কে এখনো ঘরছাড়া দুই হাজারের মতো নেতা-কর্মী।
নেতা-কর্মীরা বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় অনিন্দ্য ইসলাম আকস্মিকভাবে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা ভোট বর্জনের প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নাশকতার একাধিক মামলার আসামি বিএনপির শহর কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রমুখ।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে প্রথমে জানা ছিল না। হঠাৎ তারা কর্মসূচি করেছে। এরপর আমরা জানতে পেরেছি। যশোর কোতোয়ালি থানাতে চারটি নাশকতার মামলায় অনিন্দ্য ইসলাম বর্তমানে পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।’