গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ওসিকুর রহমানের মায়ের আহাজারি। আজ মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে
গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ওসিকুর রহমানের মায়ের আহাজারি। আজ মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে

গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত, আহত ৩

গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওসিকুর ভূঁইয়া (২৭) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের জলিল ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে চা–বিক্রেতা ছিলেন। ওসিকুর সদ্য সমাপ্ত গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএম লিয়াকত আলীর সমর্থক ছিলেন। হামলাকারীরা বিজয়ী প্রার্থী কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার সমর্থক ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ও একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লিয়াকত আলীর সমর্থক জাকির বিশ্বাসের ছেলে পরশ বিশ্বাস (১৯) মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিলেন। এ নিয়ে কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার সমর্থক একই গ্রামের কালু ভূঁইয়ার ছেলে দ্বীপ ভূঁইয়া ও হিদু ভূঁইয়ার ছেলে সিমন ভূঁইয়ার সঙ্গে পরশ বিশ্বাসের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁরা দুজন পরশ বিশ্বাসকে চড়থাপ্পড় মারেন।

খবর পেয়ে বি এম লিয়াকত আলীর সমর্থকেরা সংগঠিত হয়ে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার সমর্থকদের দিকে ধেয়ে আসে। এ সময় কামরুজ্জামানের সমর্থকদের ছোড়া গুলিতে লিয়াকত আলীর সমর্থক ওসিকুর ভুইয়া (২৭), হাকিম খন্দকার (১৭), মেহেদি বিশ্বাস (১৭) ও লিমন ভূঁইয়াসহ (২১) পাঁচজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক জুয়েল সরকার ওসিকুর ভূঁইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির মা জবেদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে লিয়াকত আলীর নির্বাচন করেছিল। আজ সন্ধ্যার পর বাজারে ওষুধ কিনতে গিয়েছিল। এ সময় কামরুজ্জামানের লোকজন আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
পরাজিত প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলী বলেন, ‘নিহত ওসিকুর ভূঁইয়া আমার ভাতিজা। সে আমার নির্বাচন করায় কামরুজ্জামান হুকুম দিয়ে তাঁর সমর্থক দিয়ে ওসিকুরকে হত্যা করিয়েছেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’

গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মতিয়ার রহমান মোল্লা বলেন, ‘আমরা লোকমুখে জানতে পেরেছি, চন্দ্রদিঘলিয়ায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জুয়েল সরকার বলেন, রাত সোয়া ৯টার দিকে সংঘর্ষে আহত চারজনকে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে ওসিকুর ভূঁইয়াকে হাসপাতালে আনার আগে মারা যান। অন্য তিনজনের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুজনকে হাসপাতালে গোপালগঞ্জে ভর্তি করা হয়।