বরগুনার বেতাগী পৌরসভা কার্যালয়ে রোববার সকালে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পৌর মেয়র গোলাম কবির অভিযোগ করেছেন, বেতাগী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে এ হামলা হয়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র গোলাম কবিরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। ১২ আগস্ট গোলাম কবির এলাকায় ফিরে আসেন। রোববার তাঁর কার্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে হামলার সময় গোলাম কবির পৌরসভা কার্যালয়ে ছিলেন না।
বেলা পৌনে একটার দিকে পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মেয়রের কক্ষের ভাঙা দরজার কাচ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। হামলাকারীরা বিভিন্ন কক্ষে চেয়ার, টেবিল, টিভি, কম্পিউটার, এসি, নামফলকসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করেছেন। বাইরে থাকা মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। আপ্যায়নের জন্য রাখা কাচের কাপ-প্লেটও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
পৌরসভার এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় তখনো কার্যালয়ে সবাই আসেননি। এমন সময় কয়েক শ লোক এসে পৌরসভা ভবনের ব্যাপক ভাঙচুর চালান। প্রতিটি কক্ষে তাঁরা ভাঙচুর করেছেন। তখন তিনিসহ অন্যরা খুব ভয়ে ছিলেন। এ সময় হামলাকারীরা মেয়রকে খোঁজাখুঁজি করেন। তবে তখন তিনি অফিসে ছিলেন না। বিএনপির রাজনীতি করেন, এমন কয়েকজনকে তিনি হামলাকারীদের মধ্যে দেখেছেন।
মেয়র গোলাম কবির অভিযোগ করে বলেন, বেতাগী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পৌরসভায় এ ভাঙচুর লুটপাট করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তাঁর ঘরবাড়ি এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পৌরসভা একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে। এখানেও তাঁরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়।
অভিযোগের বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। আজ মেয়র কার্যালয় যাবেন, এ কথা শুনে সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমানের লোকজন সেখানে হামলা চালান। এ হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, উপজেলা নির্বাচনের পর থেকেই মাকসুদুর রহমান এলাকায় নেই। তিনি ঢাকায় থাকেন। হুমায়ুন কবিরের কথার কোনো সত্যতা নেই।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, পৌরসভা কার্যালয়ে হামলার খবর পাওয়ার পরপরই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।