ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুককে বরিশালের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় বিচার আদালতের বিচারক মো. নূরুল আমিন এ আদেশ দেন।
জাহিদ ফারুক বরিশাল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তাঁকে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আদালত সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে জাহিদ ফারুককে ঢাকা থেকে বরিশালে আনা হয়। এরপর বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এজলাসে তোলা হয়।
থানা-পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট বরিশাল নগর বিএনপি কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় হওয়া একটি মামলার প্রধান আসামি হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৩ আগস্ট বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান বাদী হয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন। এ মামলায় জাহিদ ফারুক ছাড়া ৩৮১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৬০০ থেকে ৭০০ জনকে।
আদালতে উপস্থিত বিএনপিপন্থী আইনজীবী আবুল কালাম বলেন, ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুর করেন। তাঁরা নগরের সদর রোডে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেন। তবে এ মামলায় পুলিশ রিমান্ড আবেদন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
জাহিদ ফারুকের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবী আফজালুল করিম বলেন, তাঁরা আদালতে বলেছেন, ঘটনার দিন জাহিদ ফারুক বরিশালে ছিলেন না। তিনি অসুস্থ হওয়ায় ডিভিশনও সুচিকিৎসার কথা বলেছেন। পরে আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে দুপুরে বরিশাল আদালত চত্বরে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের দুই সমর্থককে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মারধর করেন। তবে জাহিদ ফারুককে আদালতে আনার সময় কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। জামিন না মঞ্জুর হওয়ার পর পুলিশ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাঁকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহিদ ফারুককে বরিশালের আদালতে হাজির করা হবে, এমন খবরে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা আদালতে অবস্থান নেন। দুপুর থেকে তাঁর সমর্থক কয়েকজন নেতা-কর্মী আদালত চত্বরে উপস্থিত হন। খবর পেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুপুরের দিকে আদালত চত্বরে যান। সেখানে শাহরিয়ার শাকিব নামের এক সমর্থককে মারধর করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিকেল চারটার দিকে আদালতে যান বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জাহিদ ফারুকের সমর্থক মো. জয়নাল আবেদীন হাওলাদার। এ সময় আদালত চত্বরে একদল যুবক তাঁকেও এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এতে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে তিনি দৌড়ে আদালতের ভেতরে আশ্রয় নেন।
জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আদালত হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তার জায়গা। সেখানে যদি এভাবে হামলা হয়, তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?’