শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না ৬৮ বছর বয়সী তারা মিয়া। অন্যের সহযোগিতায় কম্বল নিতে এসেছিলেন। কম্বল হাতে পেয়ে এই বৃদ্ধের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক দেখা যায়। তারা মিয়া বলেন, ‘এ বছর ঠান্ডা খুব বেশি পড়ছে। রাইত হইলে কনকনে শীত পড়ে। ঠান্ডার কাপড় কিনমো ট্যাকা নাই। এত দিন শীতে ঘরের বিবি (স্ত্রী) নিয়্যা কষ্ট কইর্যা আছি। কম্বল পাইয়্যা আমাগো উপকার অইল।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে মানিকগঞ্জে অসহায় শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। সদর উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের নতুন বসতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ভাটবাউর, ছুটি ভাটবাউর, দীঘি, দীঘি দক্ষিণপাড়া, দীঘি মাঝিপাড়া ও কয়ড়া গ্রামের ২০০ মানুষ এসেছিলেন। মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরা তাঁদের হাতে এসব কম্বল তুলে দেন।
এই শীতে কম্বল উপহার পেয়ে ৫৫ বছর বয়সী দীঘি মাঝিপাড়ার বাসিন্দা তুলশী রাজবংশীর মুখে স্বস্তির ছাপ দেখা গেল। তিনি বলেন, ‘আগে আমার স্বামী খাল-বিলে মাছ ধইর্যা বাজারে বিক্রি কইর্যা সংসার চালাত। অসুস্থ হওয়ার পর এহন মাছ ধরতে পারে না। মাঝেমধ্যে বাজারে গিয়ে অন্যের মাছ বিক্রি কইর্যা যা পায়, তা দিয়ে সংসার চলবার চায় না। দুই সন্তান নিয়্যা অভাবে আছি। কম্বল পাইয়্যা ভালোই অইলো।’
ভাটবাউর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম অন্যের সহযোগিতায় কম্বল নিতে আসেন। হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘চাদর গায়ে দিয়্যা শীত যাইবার চায় না। এই কম্বল গায়ে দিয়্যা গরম পামু। তোমাকে জন্যে দোয়া করমু।’
দীঘি গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আবদুর রশিদও (৪২) কম্বল নিতে আসেন। তিনি বলেন, ‘এই শীতে আমাগো কেউ খোঁজ নেয় না। আপনারা কম্বল দিলেন। এটা দরকার আছিল।’
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার গড়পাড়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. মনসুর আলী। তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ, সময়োপযোগী এবং সব শ্রেণির পাঠকের জন্য প্রথম আলো সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। এর পাশাপাশি শীতার্ত ব্যক্তিদের মাঝে কম্বল বিতরণসহ নানা সামাজিক কাজেও প্রথম আলোর ভূমিকা প্রশংসনীয়, যা অন্যদের জন্য দৃষ্টান্তও। ভবিষ্যতেও প্রথম আলোর এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
কম্বল বিতরণের সময় প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন, মানিকগঞ্জ বন্ধুসভার সহসভাপতি চান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইসরাফিল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান, আইটি ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক সৌরভ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।