নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নির্মাণাধীন একটি বিদ্যালয় ভবনের সিঁড়িকক্ষের ছাদ ঢালাইয়ের ১৭ দিনের মাথায় ভেঙে পড়েছে। ছাদে ওঠার সিঁড়িতেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
সোমবার সকাল নয়টার দিকে উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সৌদিয়া বাজার নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে ভেঙে পড়া ছাদ দেখতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঢালাই দেওয়ার কারণে ছাদটি ভেঙে পড়েছে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন। ঠিকাদারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য খবর পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয়তলার নির্মাণকাজ শুরু হয়। হাবিব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজের ঠিকাদারি পায়। প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মো. মুকুল নামের এক ব্যক্তি নির্মাণকাজটির সাব-ঠিকাদারি নেন। ১৭ দিন আগে দ্বিতীয় তলার মূল ভবনের কাজ শেষ করে সিঁড়িকক্ষের ছাদের ঢালাই দেওয়া হয়।
কয়েক দিন আগে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জানালেও তাঁরা আমলে নেননি। সর্বশেষ আজ সকাল নয়টার দিকে বিকট শব্দে সিঁড়ির কক্ষের ছাদ ভেঙে পড়ে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ছাদের ঢালাইয়ে নামমাত্র রডের ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদে পাঁচ ইঞ্চির মাথায় একটি রড দেওয়ার নিয়ম থাকলেও প্রতিটি রডের দূরত্ব রাখা হয়েছে এক ফুটের বেশি। এ ছাড়া নির্মাণসামগ্রীও ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের। ঠিকাদারের লোকজন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের হাত করে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করেছেন। এ অবস্থায় ভবনের দ্বিতীয় তলা কখন ভেঙে পড়ে, তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন তাঁরা।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শরফুদ্দিন ওরফে সবুজ প্রথম আলোকে বলেন, দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু হওয়ার পর নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করতে দেখে তিনি প্রতিবাদ করেন। কাজের তদারকি করতে আসা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কেউ তাঁর কথা শোনেননি। বরং তাঁর সঙ্গে ঠিকাদার দুর্ব্যবহার করেছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক হাবিবুর রহমান ও সাব-ঠিকাদার মো. মুকুলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর খীসা সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তাঁকে কেউ জানাননি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।