ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা আন্তজেলা সড়কে বিআরটিসি বাস চলাচল শুরু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ের রয়েল মিডিয়া কলেজের সামনে এই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাহফুজুল আলম ও যাত্রী খালেদা আক্তার।
সড়কটিতে এখন থেকে মোট ছয়টি বাস চলাচল করবে। ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোনা পর্যন্ত পুরো দূরত্বের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে বলে বিআরটিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ফিতা কেটে বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করতে পেরে আপ্লুত কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা বৃদ্ধা খালেদা আক্তার। তিনি বলেন, বাসে নেত্রকোনা যাব বলে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে দিয়ে ফিতা কেটে বাসেরই উদ্বোধন করানো হলো।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা আন্তজেলা সড়কে বাস সার্ভিস ছিল খুবই নিম্নমানের। সড়কটিতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর জন্য ২০১৯ সালে আন্দোলন শুরু হলেও সিন্ডিকেটের কারণে বাস সার্ভিস চালু হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু হয়েছে।
এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও নেত্রকোনা সদর এলাকার বাসিন্দা আবু ছাওয়াদ দানী সড়কটিতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আজ সকালে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বাস কাউন্টারে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে সে সময় আন্দোলন সফল হয়নি, বাস সার্ভিস চালু হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর গত রোববার জেলা প্রশাসন ও মালিক সমিতির সঙ্গে আলাপ শেষে বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত হওয়ায় ছাত্র-জনতা খুশি।’
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা ও নেত্রকোনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তানভির আহমেদ বলেন, নেত্রকোনার মানুষকে নানা প্রয়োজনে ময়মনসিংহে আসতে হয়। বাস সার্ভিস খারাপ হওয়ায় অনেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে আসেন। এতে সড়কটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ কমবে। তিনি আরও বলেন, সড়কে বাসগুলো ৮৫ টাকা ভাড়া নিলেও বিআরটিসি ৬০ টাকা নিচ্ছে।
বাস সার্ভিস উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিসি ময়মনসিংহ বাস ডিপোর হিসাব ইনচার্জ ফয়সাল আহমেদ, ট্রাফিক প্রধান মনির হোসেন, সহকারী প্রশাসন ইনচার্জ পলাশ দেবনাথ প্রমুখ।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাহফুজুল আলম বলেন, ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাস সার্ভিসটি চালু করা হয়। এর মাধ্যমে দুই জেলার মানুষই উপকার পাবে। কোনো সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে এটি যেন বন্ধ না হয়, সেদিকেও প্রশাসন নজর রাখবে।