কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বিএনপির এক পক্ষের হামলায় আরেক পক্ষের আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে তোলা
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বিএনপির এক পক্ষের হামলায় আরেক পক্ষের আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে তোলা

কুমিল্লায় বিএনপির দলীয় কোন্দলে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৬

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় দলীয় কোন্দলের জেরে বিএনপির প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার দিঘির পারে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত তিনজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা কুমিল্লা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন।

হামলার শিকার বিএনপির নেতা–কর্মীদের ভাষ্য, ১৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিএনপির গণতন্ত্র দিবসের সমাবেশে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল কাইয়ুমের নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা রেজাউল কাইয়ুম এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উপজেলা আহ্বায়কের পাশাপাশি রেজাউল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে আছেন।

আহতরা হলেন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলার উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা কাজী নূর আহমেদ শরীফ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দক্ষিণ দুর্গাপুর এলাকার আবদুল হান্নান, একই এলাকার বিএনপি কর্মী গোলাম মোস্তফা, সুজন, আবু ইউসুফসহ অন্তত ৬ জন।

১৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা নগরের টাউন হল মাঠে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় গণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য দেন। সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাজী নূর আহমেদ (শরীফ) দাবি করেন, ‘১৭ সেপ্টেম্বর গণতন্ত্র দিবসের বিভাগীয় সমাবেশে অংশগ্রহণ না করার জন্য আমাদের বারবার চাপ প্রয়োগ করেন রেজাউল কাইয়ুম ও তাঁর অনুসারীরা। এরপরও আমি তিন বাস নেতা–কর্মী নিয়ে ওই সমাবেশে যোগ দিয়েছি। রেজাউল কাইয়ুম অজ্ঞাত কারণে দলীয় সমাবেশে যাননি। তাঁর নির্দেশ অমান্য করায় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। যার সর্বশেষ পরিণতি শুক্রবার রাতে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয় এবং আমাদের ওপর হামলা।’

কাজী নূর আহমেদ বলেন, ‘কাইয়ুম ও তাঁর ভাই রাশেদসহ দলবল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে হত্যা করা । আমি বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।’  

এ বিষয়ে আজ শনিবার সকালে রেজাউল কাইয়ুম বলেন, ‘রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র থাকবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটা নোংরা ষড়যন্ত্র। তাঁরা ষড়যন্ত্র করে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। বিএনপির বিভাগীয় ওই অনুষ্ঠানে যেতে কাউকে নিষেধ করিনি আমি। আমি সবাইকে বলেছি দলে দলে অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য। এখন তাঁরা আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন, যেন সামনে আমি উপজেলা নির্বাচন করতে না পারি।’

কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।’  

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের ঝামেলার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।’