যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাটিকোমরা গ্রামের চম্পা খাতুনের চার বছরের মেয়ের খেলার সাথি সাত বছরের সাদিয়া খাতুন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চম্পার বাড়িতে খেলতে আসে সাদিয়া। রাতে চম্পার বাড়ির পাশ থেকে সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সাদিয়ার পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ দাবি করেছে, সাদিয়ার কানে থাকা সোনার দুলের লোভে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সাদিয়ার মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাদিয়াকে হত্যার অভিযোগে চম্পা খাতুনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
মারা যাওয়া সাদিয়া খাতুন ঝিকরগাছার মাটিকোমরা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাবলুর রহমানের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসায় পড়ে। বাবলুর রহমান কৃষিকাজ করেন। এ ঘটনায় আটক চম্পা খাতুন (২২) মাটিকোমরা গ্রামের গ্রামের আনিসুর রহমানের মেয়ে। চার বছরের মেয়েকে নিয়ে চম্পা বাবার বাড়িতেই থাকেন। চম্পার বাবা আনিসুর মালয়েশিয়াপ্রবাসী।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরের দিকে হঠাৎ নিখোঁজ হয় সাদিয়া। প্রতিবেশী চম্পাসহ আশপাশের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও সাদিয়াকে পায়নি তার পরিবার। এরপর তাকে না পেয়ে সাদিয়ার বাবা বাবলুর রহমান ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ করেন। এ সময় তাঁরা চম্পা খাতুনের ওপর তাঁদের সন্দেহের কথাও পুলিশকে জানান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চম্পার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে আটক করে পুলিশ। এ সময় চম্পার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশের একটি বাগান থেকে সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, চম্পার মেয়ের সঙ্গে সাদিয়া প্রায়ই খেলাধুলা করতে তাদের বাড়িতে যেত। অন্য দিনের মতো গতকাল দুপুরে সাদিয়া খেলতে যায় চম্পার বাড়িতে। এ সময় সাদিয়ার কানে সোনার দুল ছিল। ওই দুলের লোভে চম্পা শিশু সাদিয়াকে ফুসলিয়ে বাড়ির পাশে বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তার কান থেকে দুল ছিনিয়ে নেন চম্পা। এরপর সোনার দুল চুরির বিষয়টি যাতে প্রকাশ না পায়, সে জন্য সাদিয়াকে তিনি শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন। রাতে চম্পাকে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দেওয়ার পর সাদিয়ার লাশ বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও বলেন, আটক হওয়া চম্পা মাদকাসক্ত। চম্পার বিয়ে হয়েছে। পরে তালাক হয়ে যায়। সেই ঘরে তাঁর চার বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন চম্পা। তাঁর বাবা বিদেশে থাকেন।