ছাত্রলীগের লোগো
ছাত্রলীগের লোগো

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ

নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক

৮ বছর ৭ মাস ২৬ দিন পর ১৮ মার্চ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। সভাপতি মিনহাদুল হাসান ও সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম বিবাহিত। চুরিসহ একাধিক মামলা আছে সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল পিয়াসের বিরুদ্ধে। দুজনের বাড়ি বুড়িচং উপজেলায়। সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয় হোসেন চুরির মামলায় আট মাস জেলও খেটেছেন।

কমিটি ঘোষণার পর সহসভাপতি আবু মুছা খান ফেসবুকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ওরফে ইনানকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘আগে ইনানকে মারব, এরপর নিজেও মরব।’ কমিটি গঠনে অসন্তোষ জানিয়ে একজন সহসভাপতি পদত্যাগও করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর ৭ মাস ২৬ দিন পর ১৮ মার্চ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ১৫১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৪৫ জনের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে ২৫ জনকে, ৯ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৯ জন সাংগঠনিক সম্পাদক।

সংগঠনের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি মিনহাদুল হাসান ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নে। বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি উত্তর ইউনিয়নে বিয়ে করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর কাবিননামা ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে মিনহাদুল হাসান বলেন, ‘আমি বিবাহিত না। এগুলো অপপ্রচার। প্রত্যাশিত পদ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে কুত্সা রটানো হচ্ছে।’

সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল পিয়াস কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার জুনাব আলী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর বুড়িচং থানায় মারামারির মামলা হয়। ছাত্রলীগের নেতাদের দাবি, পিয়াস জেলা ছাত্রলীগে এক দিনের জন্যও তিনি রাজনীতি করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।

ইসরাফিল পিয়াস বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের পরীক্ষিত কর্মী–নেতা। রাজনীতি করতে গেলে মামলা হবে। এই সব মামলা বিচারে টেকে না।’

সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয় হোসেন চুরির মামলায় আট মাস জেল খাটেন। আগে জেলা ও উপজেলাতে কোনো পদপদবি ছিল না। কমিটি ঘোষণার পর সহসভাপতি আবু মুছা খান ফেসবুকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে উদ্দেশ করে লেখেন ‘আগে ইনানকে মারব, এরপর নিজেও মরব।’

জানতে চাইলে আবু মুছা খান বলেন, ‘দুই বছর আমি দলের সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। টাকার বিনিময়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক টাকা খেয়ে কমিটি দিছে। আমাদের কনিষ্ঠ কর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ করতে গিয়ে অন্তত ২০ লাখ টাকা খরচ করেছি দলের জন্য। এখন আমি দেনার তলে। ভাইবোন থেকে টাকা ধার করেছি। এই কমিটি মানি না।’

সহসভাপতি এম রুবেল হোসেন ১৯ মার্চ রাতে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, ‘গত কমিটিতে আমি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এবার সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। আমাকে সহসভাপতি করা হয়েছে। আমার কর্মীদের শীর্ষ পদে দেওয়া হয়। এটা মানতে পারছি না। তাই পদত্যাগ করেছি। আমি মানহীন কমিটি থেকে আমার নাম কর্তনের জন্য অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কমিটি নিয়ে অসদাচরণের নিন্দা জানাচ্ছি।’