ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় মানুষ খেতে পারে না, এটা অন্যায়: মৎস্য উপদেষ্টা

শরীয়তপুরের সুরেশ্বরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জেলেদের সঙ্গে সচেতনতা সভায় কথা বলছেন
ছবি: প্রথম আলো

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ খেতে পারে না, এটা বড় ধরনের অন্যায়। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের সময় ভোক্তাদের ইলিশ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে, তাহলে উৎপাদন বাড়বে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সবার এ সচেতনতা না থাকলে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো যাবে না।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বরে জেলে ও উপকারভোগীদের সঙ্গে সচেতনতামূলক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলবে। ওই সময়ে ইলিশ শিকার, আহরণ, বিপণন, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষেধ। সে বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে মৎস্য অধিদপ্তর শনিবার সুরেশ্বর লঞ্চঘাট এলাকায় এ সচেতনতা সভার আয়োজন করে। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ সময় উপদেষ্টা সুরেশ্বর এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেন।

উপদেষ্টা বলেন, এই এলাকায় পদ্মা ও মেঘনা নদী ছাড়া বিকল্প নদী নেই। জেলেদেরও বিকল্প কিছু করার থাকে না। তাই সারা দেশের জন্য মন্ত্রণালয় যে কর্মসূচি নেয়, তার চেয়ে বেশি কিছু কর্মসূচি এখানে নিতে হবে। ২২ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার সময় আগে জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এ বছর তা বাড়িয়ে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জেলেদের সহায়তার জন্য স্বল্প সুদে ঋণের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। আমরা বাংলাদেশের মানুষ। ইলিশ আমাদের সম্পদ। এটার দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ খেতে পারে না। এটা বড় ধরনের অন্যায়। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা যদি এ সময়টা মেনে চলি, তাহলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বাজারে দাম কমবে। সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারবেন।’

শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া জেরিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্র, শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাবীউজ্জামান প্রমুখ।

সভায় জানানো হয়, শরীয়তপুর জেলায় ২৯ হাজার ৩৬৭ জন জেলে রয়েছেন। ২৫ হাজার ৮৪৬ জন জেলেকে বিভিন্ন সময় খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়। এ মৌসুমে ইলিশ মাছের সঙ্গে যুক্ত ২০ হাজার জেলেকে ৫০০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হবে।