কয়েক অনুসারীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিজয়ী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আড়াই ঘণ্টা পর ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর অনুরোধে তিনি এই অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় লতিফ সিদ্দিকী ওই মহাসড়কে কালিহাতী থানার সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। এর ফলে এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী অবস্থান ধর্মঘটস্থলে যান। তিনি লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে থানায় প্রবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ আটক ছয়জনের মধ্য থেকে এজাহারে নাম না থাকা চারজনকে ছেড়ে দেন। তাঁরা হচ্ছেন হাসমত আলী, হৃদয়, পিন্টু ও খোকা। এজাহারভুক্ত দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
পরে কাদের সিদ্দিকী বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে লতিফ সিদ্দিকী তাঁর অনুসারীদের মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। সাড়ে তিনটা থেকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) হিসেবে ৭০ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫ ভোট। লতিফ সিদ্দিকী এ আসন থেকে এর আগে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার নির্বাচনের দিন কালিহাতীর নাগবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুমের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার থানায় মামলা হয়। সোমবার রাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত দুজনসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। তাঁরা সবাই লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থক। আটক অনুসারীদের মুক্তির দাবিতে লতিফ সিদ্দিকী আজ দুপুরে থানার সামনে যান। তিনি আটক কর্মীদের ছেড়ে দিতে বলেন। পুলিশ তাঁদের ছেড়ে না দেওয়ায় লতিফ সিদ্দিকী থানার সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁর সঙ্গে যোগ দেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লতিফ সিদ্দিকীর মহাসড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে এসপি বলেন, এই অবরোধের ফলে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছেন। আইন নিজস্ব গতিতেই চলবে।
লতিফ সিদ্দিকী এর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সভায় হজ ও তাবলিগ জামাত সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে তিনি কালিহাতীতে গণসংযোগ শুরু করেন।