নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে দুই বংশের লোকজনের জমি নিয়ে বিরোধে টেঁটাযুদ্ধ ও ককটেল বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে মনসুর আলী ও সাবুদ আলী বংশের লোকজনের মধ্যে এই টেঁটাযুদ্ধ হয়।
আহত ব্যক্তিরা হলেন মনসুর আলী বংশের মকবুল হোসেন (২৫), আশরাফ আলী (৪৫), জহিরুল ইসলাম (২৫), ছায়দুল ইসলাম (২৫), আমেনা বেগম (৬০) ও সখিনা বেগম (৪০)। সাবুদ আলী বংশের আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন মোখলেস (৫০), নাজির মিয়া (৫০) ও লাক মিয়া (৪২)। তাঁদের বাড়ি কালিকাপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর কেনা একটি জমি নিয়ে দুই বংশের মধ্যে বিরোধ চলছিল। জমিটি নজীর মিয়া নামের এক ব্যক্তি একই এলাকার মনু মিয়ার কাছ থেকে কিনেছিলেন। একই জমি অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রির চেষ্টা চলছিল। এ নিয়ে দুই বংশের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে, তা মীমাংসার চেষ্টা সফল হয়নি। উল্টো দুই পক্ষ কয়েক দফা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল থেকে তারা টেঁটাযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এ সময় দুই পক্ষই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মকবুল মিয়া ককটেল বিস্ফোরণে চোখে আঘাত পেয়ে রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া টেঁটাবিদ্ধসহ বাকি আট আহত ব্যক্তি রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খান নুরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর জানান, এ ঘটনায় আহত আটজন তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, একজনকে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে নজীর মিয়া বলেন, ‘গতকাল রোববার ওই জমি নিয়ে মীমাংসায় বসলে বিরোধে জড়িয়ে আমার একজন লোককে পিটিয়ে আহত করা হয়। এরই জেরে আজ ভোরে নান্নু মিয়া ও বরকত আলীর নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের বংশের নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে নান্নু মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। তবে বরকত আলী বলেছেন, ‘জমির বিরোধে মনসুর আলী বংশের লোকজনই ঝগড়ায় জড়িয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার বলেন, জমির বিরোধে দুই বংশের মধ্যে এই টেঁটাযুদ্ধ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।