পাবনা জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় অস্ত্র প্রদর্শন করে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই হামলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান আহত হয়েছেন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে। তবে তাঁরা আপাতত নেতার ছেলের নামটি প্রকাশ করছেন না। অন্য সূত্র থেকেও নামটি জানা যায়নি।
জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগ এ বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুকের।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। নেতা-কর্মীরা নীরবতা পালনের জন্য দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ৪০ থেকে ৪৫ যুবক সেখানে হামলা চালান। ‘অনুমতি না নিয়ে অনুষ্ঠান করছিস কেন’—এমন প্রশ্ন করে তাঁরা ভাঙচুর শুরু করেন। এতে নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন। হামলাকারী নেতা–কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তাঁরা কয়েকজনকে মারধর করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ফেরার পথে তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কয়েকটি চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাব্বিউল ইসলাম বলেন, আচমকা এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারী নেতা–কর্মীরা চাকু, ছুরিসহ বিভিন্ন দেশি আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করেন। বিভিন্নভাবে তাঁদের থামানোর চেষ্টা করা হলেও তাঁরা থামেননি। ভাঙচুর চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
রাব্বিউল আরও বলেন, প্রকৃত ছাত্রলীগ যাঁরা করেন, তাঁরা এমন আচরণ করতে পারেন না। জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের পর বিরোধের কোনো ঘটনাও নেই। তাঁরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানাবেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শ অনুযায়ী হামলাকারী নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁরা আপাতত তাঁর নামটি বলতে চাচ্ছেন না। এখন ডিজিটাল যুগ, অনুষ্ঠানস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। আশা করছেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ হামলাকারী নেতা–কর্মীদের শনাক্ত করতে পারবে। বর্ধিত সভা শেষ করে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁরা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রওশন আলী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একদল দুর্বৃত্ত হঠাৎ হামলা চালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির আলামত পাওয়া গেছে। তবে কারও বিরুদ্ধে কেউ এখনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।