মিনিটের মধ্যে ট্রেনে আটকে পড়া মানুষকে মরতে দেখেছি

নুরুল ইসলাম: দেখলাম এগার (এগারসিন্দুর) বের হচ্ছে। মালগাড়ি ঢুকছে। কী ঘটতে যাচ্ছে, তখনো বুঝতে পারিনি। হঠাৎ কানফাটা আওয়াজ। ধুলা আর ধুলা। চেঁচামেচি।

নুরুল ইসলাম: কী করব, বুঝতেছি না। চিৎকার দিয়া উঠলাম। কে কই আছ, তাড়াতাড়ি আসো। মরে গেছে, মরে গেছে বলতে লাগলাম।

নুরুল ইসলাম: গরুটা একজনকে ধরিয়ে দিয়ে উদ্ধারে নামলাম। মনে হলো, প্রাণ আছে এমন লোকজনকে আগে উদ্ধার করি।

নুরুল ইসলাম: কয়েক মিনিটের মধ্যে হাজারো মানুষ হাজির। সবার হাতে মোবাইল। সবাই ভিডিও-লাইভ নিয়া ব্যস্ত। এসব লোকের জন্য আহতদের বের করে হাসপাতালে পাঠাতে কষ্ট হয়েছে।

নুরুল ইসলাম: কিছুক্ষণ পরই এসেছে। ফায়ার সার্ভিস দল একবার এসে আবার যন্ত্রপাতি আনতে গিয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লোকজনকে সরাতে ব্যস্ত ছিল।

নুরুল ইসলাম: একজন যাত্রীর পা আটকে ছিল। বের করে আনতে পারছিলেন না। আমি গিয়ে টান দিলাম। দেখলাম বডিটা (শরীর) এসেছে, পা ট্রেনের ভেতর রয়ে গেছে।

নুরুল ইসলাম: এটা লজ্জার। মানুষের বিবেক মরে গেছে। আমি দেখেছি একজন মহিলা হাত বাড়িয়ে সাহায্যের জন্য ডাকছেন। একজন গেলেন, সাহায্য করলেন না। গলা থেকে চেইনটা নিয়ে পালাতে গেলেন। আমি ধরলাম, জোরে একটা চড় দিলাম।

নুরুল ইসলাম: একজন যাত্রী চাপা পড়েছেন। এই অবস্থায় বাঁচাও বাঁচাও বলছেন। চোখের সামনে মিনিটের মধ্যে ট্রেনে আটকে পড়া মানুষকে মরতে দেখেছি। তখন মনে হয়েছে, আল্লাহ যদি আমাকে শক্তি দিতেন, আর আমি একাই গাড়িটা (বগি) উল্টে ফেলতে পারতাম!

নুরুল ইসলাম: অনেকেই যোগ দিয়েছেন।

নুরুল ইসলাম: গরুর খামার আছে। গরু পালন করেই সংসার চলে।

নুরুল ইসলাম: স্ত্রী ও দুই সন্তান।

নুরুল ইসলাম: রেললাইনের পাশে থাকি। ট্রেন লাইনচ্যুত হতে দেখেছি। তবে মানুষ মরতে দেখিনি।

নুরুল ইসলাম: দুর্ঘটনা দেখলে মানুষকে উদ্ধার না করে কি পারা যায়।