রেকর্ড পরিমাণ কয়লা নিয়ে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরে ভিড়েছে ১০ দশমিক ২ মিটার গভীরতার একটি বিদেশি জাহাজ। এমভি মিশিনিয়ান স্পায়ার নামের বাহামার পতাকাবাহী জাহাজটি ইন্দোনেশিয়ার বালিক পানান বন্দর থেকে ৪০ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে পটুয়াখালীর রাবনাবাদ চ্যানেল দিয়ে গতকাল সোমবার পায়রা বন্দরের অভ্যন্তরীণ জেটিতে নোঙর করে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে আসা জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৯০ মিটার ও প্রস্থ ৩২ মিটার। এটি বন্দরে সবচেয়ে বেশি পণ্য আনা জাহাজ। এর আগে ৫ এপ্রিল (বুধবার) অরুনা হুলিয়া নামের একই গভীরতার আরেকটি জাহাজ বন্দরে নোঙর করে। ১৮৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই জাহাজটিতে ৩৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন কয়লা আনা হয়েছিল। এ ছাড়া গত রোববার ‘গ্রাম্পাস ব্রেভ’ নামের আরেকটি জাহাজ বন্দরে নোঙর করেছিল।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মো. আজিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, এমভি মিশিনিয়ান স্পায়ার জাহাজটি পায়রা বন্দরের অভ্যন্তরীণ জেটিতে নোঙর করেছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে জাহাজটির পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হবে।
গত ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলটির খননকাজ শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০২২ সালের ১ আগস্ট বেলজিয়ামভিত্তিক খনন কোম্পানি জান ডি নাল চ্যানেলের খননকাজ শুরু করে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। চ্যানেলটি বুঝে পাওয়ার পর পায়রা বন্দরকে দেশের সবচেয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন এস এম শরীফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন প্রকল্পটি দেশে এককভাবে সবচেয়ে বড় প্রকল্প, কর্তৃপক্ষ যেটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চ্যানেলটি খননের কারণে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৩২ মিটার প্রস্থের বড় জাহাজ এখন বন্দরের অভ্যন্তরীণ জেটিতে ভিড়তে পারবে। এতে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা পায়রা বন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত হবেন।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, পায়রা সমুদ্রবন্দরে ২০২১ সালে ৬৪টি বিদেশি জাহাজ এবং ১৭৬টি দেশি লাইটার জাহাজে মালামাল পরিবহনে ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। আর ২০২২ সালে ১২১টি বিদেশি এবং ৮৮৫টি লাইটার জাহাজে পণ্য আনায় ৩৮৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়।