সিলেট ব্যবসায়ীদের পরামর্শক সভা

অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রতিবেশী দেশগুলোর আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে বক্তব্য দেন ইউএনএসকাপের সাউথ ও সাউথ-ওয়েস্ট এশিয়া কার্যালয়ের পরিচালক ও প্রধান মিকিকো তানাকা। বুধবার সকালে
ছবি : প্রথম আলো

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সিলেটে এক পরামর্শক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় নগরের জেল রোড এলাকার সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং ইউএন ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (ইউএনএসকাপ) উদ্যোগে এ সভা হয়েছে। এটি আয়োজনে সহযোগিতা করেছে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।

পরামর্শক সভায় বক্তব্য দেন ইউএনএসকাপের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া কার্যালয়ের পরিচালক এবং প্রধান মিকিকো তানাকা; বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির; সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের পরিচালক আরিফুর রহমান; ইউএনএসকাপের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া কার্যালয়ের ডেপুটি হেড রঞ্জন এস রত্ন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফজলে এলাহী মো. ফয়সল।

বক্তারা বলেন, ভৌগোলিক সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো উচিত। এটা করতে পারলে এসব অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ বাড়ানো এবং নারী উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার।

বিবিআইএনভুক্ত দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, বেসরকারি খাত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। অথচ সঠিক তথ্য সংগ্রহের অভাবের কারণে এ খাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে বিরাজমান সমস্যা দূর করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ তাঁর বক্তৃতায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের বিকাশে সিলেটের জকিগঞ্জ ও ভারতের করিমগঞ্জ সীমান্তবর্তী কুশিয়ারা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং বাণিজ্য ঘাটতি দূর করে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে বাধাগুলো দূর করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

এ ছাড়া বক্তারা সভায় বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট সমস্যা দূরীকরণ, বিবিআইএনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একই সার্টিফিকেট প্রযোজ্যকরণ, রপ্তানি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ স্টেট ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্স রহিতকরণ, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে ভারতের ট্রানজিট–সুবিধা প্রদান, বর্ডার হাটগুলোতে ভারতীয় ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ানোসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউএনএসকাপের প্রতিনিধিদলের সদস্য আজহার জে ডুকরেস্ট, জোসেফ জর্জ, পলাশ শ্রীবাস্তব, প্রজ্ঞাঞ্জন তরফদার, সুমন্ত বিশ্বাস, মাজেদুল ইসলাম, সিলেট চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীমুল এহছান চৌধুরী, সদস্য মঈনুল ইসলাম, নীহার রঞ্জন দাস, আরিফ হোসেন, সিলেট চেম্বারের সচিব গোলাম আক্তার ফারুক প্রমুখ।