চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আবারও এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্তা ও তাঁর বাগ্দত্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার রাতে ক্যাম্পাসের লেডিস ঝুপড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্যমতে, জড়িতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ সময় তাঁরা মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত। তিনি জানান, গতকাল রাতে তিনি বের হয়েছিলেন তাঁর বাগ্দত্তার সঙ্গে দেখা করার জন্য। রাতে লেডিস ঝুপড়িতে এক চায়ের দোকানে বসে কথা বলছিলেন তাঁরা। এ সময় দুজন তরুণ তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর করে মুঠোফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন। পরে মুঠোফোন খোলার জন্য পাসওয়ার্ড চান তাঁরা। পাসওয়ার্ড দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুজনকেই চড়-থাপ্পড় দেন। পাশাপাশি তাঁকে যৌন হেনস্তা করা হয়। পরে তাঁরা বাধ্য হয়ে পাসওয়ার্ড দেন।
মুঠোফোন ঘেঁটে ওই ছাত্রীর রাজনৈতিক পরিচয় জানার পর হেনস্তাকারীরা চলে যান বলে জানান ভুক্তভোগী ছাত্রী। তাঁর বাগ্দত্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ওই ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের মোট তিনটি ফোন ও প্রায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন ওই দুই ছাত্র। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বরাবর চিঠি দিয়ে এসব বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে একজন সহকারী প্রক্টরকে প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য রেজিস্ট্রারকে চিঠি পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যৌন হেনস্তা, শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত বছর ১৭ জুলাই রাতে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে পাঁচ তরুণের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঘটনার পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই র্যাব পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায়। এর মধ্যে আজিম ও নুরুল আবছার নামের দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর বিশ্ববিদ্যালয় দুই ছাত্রকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দুই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল শাখা ছাত্রলীগের চার কর্মীর বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঘটনার ১০ মাস পর তাঁদের চারজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।